পেঁপে উৎপাদন করবেন যেভাবে

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩৩ এএম, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

পেঁপে এক ধরনের সবজি। আবার পাঁকা পেঁপে সুস্বাদু ফল। দ্বিমুখী গুণের অধিকারী পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবেও স্বচ্ছলতা লাভ করা যায়। আসুন জেনে নেই পেঁপে উৎপাদনের পদ্ধতি-

মাটি
পেঁপে উৎপাদনের জন্য উঁচু ও মাঝারি জমি ভালো। উপযুক্ত পরিচর্যার মাধ্যমে প্রায় সব ধরনের মাটিতেই পেঁপে চাষ করা যায়।

বীজ
প্রতি সারিতে ২ মিটার দূরত্বে চারা রোপণ করলে ১ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ৫০০ গাছের জন্য ৭ হাজার ৫০০ চারার প্রয়োজন। নতুন বীজ হলে ১৪০-১৬০ গ্রাম বীজ দিয়ে প্রয়োজনীয় চারা উৎপাদন করা যায়।

চারা
বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ১৫-১০ সেন্টিমিটার আকারের ব্যাগে সমপরিমাণ বালি, মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ দিয়ে ব্যাগের তলায় ২-৩টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর নতুন সংগৃহীত বীজ হলে ১টি এবং পুরাতন হলে ২-৩টি বীজ বপন করতে হবে। একটি ব্যাগে একের অধিক চারা রাখা উচিত নয়। ২০-২৫ দিন বয়সের চারায় ১-২% ইউরিয়া স্প্রে করলে চারার বৃদ্ধি ভালো হয়।

pape

রোপণ
দেড় থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপণ করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০-৬০-৬০ সেন্টিমিটার আকারের গর্ত করে রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটিতে সার মেশাতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য দুই সারির মাঝখানে ৫০ সেন্টিমিটার নালা রাখতে হবে।

সময়
শাহী পেঁপে সারা বছর চাষ করা যায়।

সার
প্রতি পেঁপে গাছে ইউরিয়া ৪৫০-৫৫০, টিএসপি ৪৫০-৫৫০, এমপি ৪৫০-৫৫০, জিপসাম ২৪৫-২৫০, বোরাক্স ২০-৩০, জিংক সালফেট ১৫-২০ এবং জৈব সার ১২-১৬ গ্রাম সার ব্যবহার করতে হবে।

প্রয়োগ
চারা লাগানোর পর নতুন পাতা এলে ইউরিয়া ও এমপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি একমাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। ফুল এলে এ মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়। শেষ ফল সংগ্রহের একমাস আগেও সার প্রয়োগ করতে হবে। পচা গোবর, টিএসপি, জিপসাম, বোরাক্স এবং জিংক সালফেট গর্ত তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে।

pape

পরিচর্যা
প্রতি গর্তে ৩টি চারা রোপণ করা যায়। ফুল এলে ১টি স্ত্রী গাছ রেখে বাকি গাছ তুলে ফেলতে হবে। পরাগায়ণের জন্য বাগানে ১০% পুরুষ গাছ রাখা হয়। ফুল থেকে ফল ধরা নিশ্চিত মনে হলে একটি বোঁটায় একটি ফল রেখে বাকিগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে। গাছ যাতে ঝড়ে না ভাঙে তার জন্য বাঁশের খুটি দিয়ে গাছ বেঁধে দিতে হবে। দুই সারির মাঝঁখানের নালার মাধ্যমে পানি নিকাশ নিশ্চিত করতে হবে। নিয়ন্ত্রিত পরাগায়ণের মাধ্যমে জাতের বিশুদ্ধতা বজায় রাখা যায়।

সংগ্রহ
ফলের কষ জলীয়ভাব ধারণ করলে সবজি হিসেবে সংগ্রহ করা যায়। আর ফলের ত্বক হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে পাকা ফল হিসেবে সংগ্রহ করা হয়।

ড্যাম্পিং অফ
পেঁপের ঢলে পড়া রোগে প্রচুর চারা গাছ মারা যায়। তাছাড়া এ রোগের জীবাণুর আক্রমণে বর্ষা মৌসুমে কাণ্ড পচা রোগও হয়। পিথিয়াম অ্যাফনিডারমাটাম নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়। বর্ষা মৌসুমে ঢলে পড়া রোগের প্রকোপ খুব বেশি দেখা যায়। বৃষ্টির পানিতে অথবা সেচের পানিতে এ রোগের জীবাণু ছড়ায়। অনেক সময় জিংকের অভাবে মোজাইকের মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়।

pape

প্রতিকার
গাছের গোড়ার পানি নিকাশের ভালো ব্যবস্থা রাখতে হবে। বীজতলার মাটি ৫% ফরমালডিহাইড দ্বারা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। রোগাক্রান্ত চারা গাছ মাটি থেকে উঠিয়ে পুড়ে ফেলতে হবে। রিডোমিল এমজেড-৭২ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর গাছের গোড়ার চারপাশের মাটিতে প্রয়োগ করতে হবে। জিংকের ঘাটতির জন্য মোজাইক লক্ষণ দেখা দিলে গাছের গোড়ায় গাছপ্রতি ৫-১০ গ্রাম জিংক প্রয়োগ করলে এবং ০.২% জিংক গাছের পাতায় স্প্রে করলে এ সমস্যা দূর হয়।

এসইউ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।