গবাদি পশুর রোগ ও প্রতিকার- শেষ পর্ব

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৫৫ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আমাদের গৃহপালিত বা খামারের গবাদি পশুর মাঝে মাঝে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। এতে গবাদি পশুর উৎপাদন কমে যায়। এসব বিষয়ে সবারই প্রাথমিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আসুন জেনে নেই গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে। আজ থাকছে শেষ পর্ব-

উকুন ও আঠালি
উকুন, আঠালি ও মাইট বহিঃপরজীবী। বিভিন্ন ধরনের উকুন, আঠালি ও মাইট দ্বারা পশু আক্রমণ হতে পারে। এরা পশুর শরীরের উপরিভাগে অর্থাৎ চামড়ায় বসবাস করে এবং শরীর থেকে রক্ত চুষে বেঁচে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে এরা বিভিন্ন ধরনের রোগ এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়ায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এরা রক্ত চুষে রক্ত স্বল্পতা সৃষ্টি করে।

লক্ষণ
১. পশুর লোম উসকো-খুসকো হয়ে যায় এবং অনেক সময় লোম ঝরে যায়।
২. পশুর ঘাড়ে চুলকানী হয় এবং শক্ত বস্তুর সাথে শরীর ঘষার ফলে অনেক সময় চামড়া উঠে যায়।
৩. পশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং দুধ উৎপাদন কমে যায়।
৪. রক্ত স্বল্পতা দেখা যায়।
৫. আঠালি এনাপ্লামোসিস ও বেবিসেয়োসিস নামক রোগের জীবাণু বহন করে বলে এসব রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

poshu

চিকিৎসা
ভার্মিক ইনজেকশন (আইভারমেকটিন) ০.২ মিলিগ্রাম বা কেজি দৈহিক ওজন হিসেবে অর্থাৎ প্রতি ৫০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ মিলি হিসেবে চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হবে।

নেগোসাইট পাউডার (নেগোডন পাউডার) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম পাউডার মিশিয়ে পশুর শরীরে স্প্রে করতে হবে অথবা পানিতে ন্যাকড়া ভিজিয়ে সমস্ত শরীরে লাগিয়ে দিতে হবে। ২১ দিন পর এভাবে পুনরায় প্রয়োগ করতে হবে। হালকা গরম পানিতে নেগোসাইট পাউডার মেশালে ভালোভাবে মিশে যায় এবং ভালো ফল পাওয়া যায়।

সতর্কতা
• লেগুডন পাউডার প্রয়োগের আগে ও কিছু পর পর্যন্ত পশুকে খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে হবে।
• পশুর মুখে অবশ্যই ঠুসি পরিয়ে রাখতে হবে।
• ওষুধ ব্যবহারের দুই ঘণ্টা পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে শরীর ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে।

প্রতিরোধ
উকুনের চিকিৎসায় লিন্ডেন ০.০৫%, ম্যালাথিওন ০.৫% ও টক্সেফেন ০.৫% পশুর শরীরে স্প্রে বা ব্রাশের সাহায্যে ব্যবহার করা যায়। কিছু কীটনাশক সাইপারমেথ্রিন-১০০০ পি.পি.এম স্প্রে হিসেবে উকুনের বিরুদ্ধে কার্যকর।

poshu

আঠালি প্রতিরোধের জন্য কীটনাশক পদার্থ প্রয়োগ যথা- কোয়ামাফস-০.১-০.১৫% প্রয়োগ করে ১০০% কার্যকর এবং ডায়াজিনোন- ০.০২৫-০.২০% স্প্রে করতে হয়। এছাড়া সঠিক চারণভূমি ব্যবস্থাপনা এবং রেজিস্ট্যান্ট পশু সৃষ্টি করতে হয়।

মাইট আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য বেনজিন হেক্সাক্লোরাইড (০.০১৬%) ডায়াজিনোন (০.০১%) ও প্রোপেটামফোস (০.০১২৫%) মোষ একবার ডিপিংয়ে কার্যকর এবং প্রায় ৪ সপ্তাহ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। ট্রাইক্লোরফেন ০.৫-১.৫% দিয়ে আক্রান্ত মহিষের শরীর প্রত্যেক দিন ধুলে ৫ দিনে আরোগ্য লাভ করে। টক্সোফেন (০.৫%) গরুতে একবার ডিপিং পদ্ধতিতে প্রয়োগে মাইটের বিরুদ্ধে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।