গবাদি পশুর রোগ ও প্রতিকার- তৃতীয় পর্ব

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০১ এএম, ৩১ আগস্ট ২০১৭

আমাদের গৃহপালিত বা খামারের গবাদি পশুর মাঝে মাঝে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। এতে গবাদি পশুর উৎপাদন কমে যায়। এসব বিষয়ে সবারই প্রাথমিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আসুন জেনে নেই গবাদি পশুর রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে। আজ থাকছে তৃতীয় পর্ব-

কাঁধে ঘা
স্টেকানোফাইলেরিয়া আসাসেনসিস নামক কৃমিই এ রোগের জন্য দায়ী। গবাদি পশুর লাঙল পানা বা অন্যান্য ঘর্ষণের ফলে কাঁধে ছোট ছোট ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যেখানে মাছির মাধ্যমে উপরোল্লিখিত কৃমির ডিমের সংক্রমণ ঘটে এবং ধীরে ধীরে বিরাট ক্ষতের সৃষ্টি হয়। যেহেতু এটি কৃমিজনিত ঘা তাই এখানে অ্যান্টিবায়োটিক পাউডার বা মলম লাগিয়েও কোন উপকার পাওয়া যায় না।

Animel

লক্ষণ
১. গবাদি পশুর কাঁধে প্রথমে ছোট ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং ধীরে ধীরে তা অনেক বড় হয়ে যায়।
২. এতে খুব বেশি চুলকানি হয় ফলে পশু যেকোন শক্ত বস্তুর সাথে কাঁধ ঘষে।
৩. ঘর্ষণের ফলে রক্ত বের হয় বা লাল রঙের পানির মত পদার্থ বের হয়।
৪. ঘায়ের উপরের অংশে কেরোটিন জমে শক্ত হয়ে যায়।
৫. পশু খুব অস্বস্তি বোধ করায় খাওয়া-দাওয়া কমে যায়।
৬. গাভীর দুধ উৎপাদন কমে যায়।
৭. পশু লাঙল বা গাড়ি টানতে পারে না।

চিকিৎসা
৬-২০% ভ্যাসলিনের সাথে মলম তৈরী করে দিনে ২-৩ বার লাগানো যায়। তবে নেগুভোন ও সালকানিলামাইড সমন্বয়ে ভ্যাসলিন দিয়ে তৈরী মলম অধিক কার্যকরী। মলম প্রয়োগের পূর্বে ক্ষতস্থানের বিনষ্টকলা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (১:১০০০০০) সল্যুশন দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ২-৩ বার করে মোট ১০ দিন প্রয়োগ করলে ১৫ দিনের মধ্যে আরোগ্য লাভ হয়।

Animel

এছাড়া নেগুভোন তিসির তেল বা কাস্টর ওয়েলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। তবে টেট্রামিজল হাইড্রোক্লোরাইড (৭.৫%) মলম ৩-৪ দিন প্রয়োগে ১০০% পশু ভালো হয়। প্রতিকেজি দৈহিক ওজনের জন্য ২০০ মাইক্রোগ্রাম হিসেবে ২৮ দিনের ব্যবধানে ত্বকের নিচে মোট দুটি ইনজেকশন বেশ কার্যকর। যেমন- ভার্মিক ইনজেকশন ০.২ মিলিগ্রাম প্রতিকেজি দৈহিক ওজন হিসেবে অর্থাৎ ৫০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ মিলিলিটার হিসেবে চামড়ার নিচে ইনজেকশন দিতে হবে এবং ২৮ দিন পর পুনরায় দিতে হবে।

প্রতিরোধ
• ক্ষতস্থানে যাতে কোন মাছি না বসে সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ উদ্দেশ্যে ক্ষতস্থান পলিথিন বা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া উত্তম।
• কীটনাশক পদার্থ বা মাছি তাড়ানোর ওষুধ ব্যবহার করা ভালো। এক্ষেত্রে তারপিন তেল ক্ষতে প্রয়োগ করা হয়।
• ক্ষতের সুষ্ঠু চিকিৎসার মাধ্যমে কৃমি ধ্বংস করে রোগের উৎস বন্ধ করতে হবে।

এসইউ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।