দুধের উৎপাদন বাড়াবেন যেভাবে

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৮ এএম, ২২ আগস্ট ২০১৭

গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগতমান জাতের ওপর নির্ভর করে। দেশীয় জাতের গাভীর দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে কিন্তু এরা দুধ উৎপাদন করে কম। বিদেশি জাতের গাভী দেশীয় জাতের গাভী থেকে বেশি দুধ দেয়।

খাদ্য
খাদ্য গাভীর দুধ উৎপাদন ও গুণগতমানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। বেশি খাবার দিলে বেশি দুধ পাওয়া যায়। অবশ্যই সুষম খাদ্য হতে হবে। কারণ খাদ্যে বিদ্যমান উপাদানগুলো ভিন্ন অবস্থায় দুধের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়। খাদ্য দুধে মাখনের উপস্থিতি কম-বেশি করতে পারে।

মাত্রাতিরিক্ত দানাদার খাদ্য, পিলেট জাতীয় খাদ্য, অতিরিক্ত রসালো খাদ্য, মিহিভাবে গুঁড়ো করা খড়ে গাভীর দুধের মাখনের হার কম হতে পারে। মাখনের পরিমাণ কমে গেলে খাদ্য পরিবর্তন করে প্রয়োজনীয় সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে। দুধে খনিজ পদার্থ ও খাদ্যপ্রাণের পরিমাণ গাভীর খাদ্যের মাধ্যমে বাড়ানো যায়। গাভীকে সুষম খাদ্য না দিলে দুধে সামান্য মাত্রায় আমিষ ও শর্করা জাতীয় উপাদান পাওয়া যায় এবং দুধ উৎপাদনের পরিমাণ কমে যায়।

milk-cow

দোহন
দুধ দোহন বিশেষ করে দোহন কাল, দোহনের সময়, দুধ দোহন প্রক্রিয়া, বিভিন্ন বাঁটের প্রভাব ইত্যাদি গাভীর দুধের পরিমাণ ও মানকে প্রভাবিত করে। গাভীর দুধ দেওয়ার পরিমাণ আস্তে আস্তে ৫০ দিনে বেড়ে সর্বোচ্চ হয়। ওলানে দুধের চাপের ওপর দুধের পরিমাণ ও উপাদান নির্ভর করে। দুগ্ধদান কালের ৯০ দিন পর থেকে দুধে মাখন ও আমিষের হার আংশিক বাড়ে। একই গাভীকে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দোহন করলে দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। তাই সকালের দুধের চেয়ে বিকালের দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই গাভীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২-৩ বার দোহন করা উচিত। এতে দুধ উত্পাদনের পরিমাণ বাড়তে পারে।

প্রসবকালে
প্রসবকালে গাভীর সুস্বাস্থ্য আশানুরূপ দুধ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাভী থেকে বেশি দুধ পেতে হলে গর্ভকালে সুষ্ঠু পরিচর্যা ও সুষম খাদ্য দেওয়া প্রয়োজন। প্রসবের দুই মাস আগে গাভীর দুধ দোহন অবশ্যই বন্ধ করে দিতে হবে। মোট দুধ উৎপাদনের ৪০% ওলানের সামনের অংশের বাঁট এবং ৩০% পেছনের অংশের বাঁট থেকে পাওয়া যায়। গাভীর ওলানের বাঁট অবশ্যই সুস্থ থাকতে হবে।

milk-cow

সতর্কতা
রক্ষণাবেক্ষণ, বাসস্থান, গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগতমানের হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী। পারিপার্শ্বিক অবস্থা গাভীর জন্য আরামদায়ক হওয়া উচিত। দোহনের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন না করলে অর্থাৎ দুধ দোহন ত্রুটিপূর্ণ হলে দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ও গুণগতমান কমতে পারে।

মৌসুম
প্রতিকূল আবহাওয়া দুধ উৎপাদনের জন্য ক্ষতিকর। শীত মৌসুম দুধাল গাভীর জন্য আরামদায়ক। এ মৌসুমে দুধ উৎপাদনের এবং দুধে মাখনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, গরমকাল, বর্ষাকাল, আর্দ্র আবহাওয়ায় গাভীর দুধের উৎপাদন ও গুণগতমান হ্রাস পায়। গরমের দিকে গাভীকে ঠান্ডা অবস্থায় রাখলে উৎপাদনের কোনো ক্ষতি হয় না। গাভীর প্রজননের সময় দুধ উৎপাদন কমে যায়।

milk-cow

প্রসব বিরতি
দীর্ঘ বিরতিতে বাচ্চা প্রসব করলে গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কম বিরতিতে বাচ্চা প্রসবের কারণে দুধ উত্পাদন কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। তাই গাভীকে বাচ্চা প্রসবের ৬০-৯০ দিনের মধ্যে পাল দিতে হবে। কোনোক্রমেই ৬০ দিনের আগে প্রজনন করানো উচিত নয়। গাভীর শরীরে ৫০% এবং দুধে প্রায় ৮৭% পানি থাকে। তাই গাভীকে ইচ্ছামত পানি পান করার ব্যবস্থা করলে দুধ উৎপাদন বেশি হয় এবং দুধে মাখনের পরিমাণ বেশি থাকে।

এসইউ/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।