ফরিদপুরে লালমির বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ফরিদপুর
প্রকাশিত: ১১:৫৯ এএম, ২৪ মার্চ ২০২৫

ফরিদপুরের সদরপুরে লালমির বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান মাস উপলক্ষে চাষিরা লালমির দামও পাচ্ছেন বেশ ভালাে। বাম্পার ফলন আর ভালাে দাম পেয়ে চাষিদের মুখে ফুটেছে খুশির হাসি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত লালমি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

লালমি হচ্ছে বাঙ্গি জাতীয় সুস্বাদু রসালো ফল। দেখতে বাঙ্গির মতো হলেও স্বাদ ও গন্ধে রয়েছে ভিন্নতা। লালমিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকায় রোজাদারদের কাছে ফলটি বেশ জনপ্রিয়। প্রতি বছর রমজান মাসকে সামনে রেখে ফরিদপুরের সদরপুরের চাষিরা লালমির চাষ করে থাকেন। চলতি মৌসুমে একশ লালমি প্রকারভেদে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষিরা ক্ষেত থেকে লালমি উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্ষেত থেকে লালমি তুলে পাশেই ধোয়া হচ্ছে, এরপর ভ্যান ও বিভিন্ন গাড়িতে করে পাঠানো হচ্ছে হাটে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পাইকাররা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে লালমি কিনছেন। ব্যাপারীরা এসে লালমি কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছেন। ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় এখানকার লালমির চাহিদা দেশজুড়ে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লালমি আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় সদরপুর উপজেলায়। এ বছর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ফরিদপুরে লালমির বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা

লালমি চাষি মোঃ আবেদ শেখ বলেন, অন্য বারের চেয়ে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও বেশ ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। খরচ পুষিয়ে লাভ ভালোই হচ্ছে।

এ ব্যাপারে লালমি চাষি মোঃ শহিদুল শেখ বলেন, প্রতিবছর আমরা রমজান উপলক্ষে লালমির চাষ করে থাকি। এ ফলটি রোপণের চার মাসের মধ্যেই বিক্রি করা যায়। তুলনামূলক খরচও কম। লাভও বেশি। গত কয়েক বছর দাম কম হলেও এবার ভালো দাম পাচ্ছি। আগামীতে এলাকার চাষিরা লালমি চাষে আগ্রহী হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নাটোর থেকে আগত পাইকার ব্যবসায়ী মোঃ কবিরুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর ধরে এই সময়ে এখান থেকে লালমি কিনতে আসি। প্রতি সপ্তাহে দুই দিন এখানে লালমি কিনতে আসি। আকারভেদে একশ লালমি ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকায় কিনতে হয়। গাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ১০০ পিসে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। পরে প্রতিটি লালমি ১০ টাকা লাভে বিক্রি করি।

ঢাকা থেকে আগত আকিদুল শেখ বলেন, প্রতিবছর এখানে এসে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে লালমি কিনে থাকি। এখানে কোনো আড়ৎদার নেই। এখানকার লালমির স্বাদ ভালো, রাসায়নিক মুক্ত। যে কারণে এখানকার লালমির সারাদেশে বেশ চাহিদা রয়েছে।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান বলেন, ‘রমজান উপলক্ষে এ জেলার মানুষ লালমির চাষ করে। কম খরচ আর লাভজনক। এবার ফলনও হয়েছে ভালো। চাষিরা দামও পাচ্ছেন ভালো। সারাদেশে বেশ চাহিদা থাকায় লালমি দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, এখানকার চাষিরা লালমিতে কোনো রাসায়নিক ব্যবহার করেন না। তাই এটি সুস্বাদু ও বেশ জনপ্রিয়। ফরিদপুরের লালমির চাহিদা দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে। এ বছর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন। যার বাজারমূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা।

কেএসকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।