মানিকগঞ্জে সরিষা ও মধুতে লাভবান চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:৫২ পিএম, ০১ জানুয়ারি ২০২৫
মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ, ছবি: জাগো নিউজ

মানিকগঞ্জের মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের হলুদ সমারোহ। সরিষা ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু সংগ্রহ করছে মৌমাছির ঝাঁক। সংগৃহীত মধু নিয়ে জমা করছে পাশে স্থাপিত মৌ-বাক্সে। এতে সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন সরিষার উৎপাদন বাড়ছে; তেমনই বাড়ছে মধুর উৎপাদন। সরিষা ও মধুর সমন্বিত চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক ও মৌ-চাষিরা।

সরিষা ফুল থেকে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করায় যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন মধু সংগ্রহকারীরা; তেমনই বাড়ছে সরিষার উৎপাদনও। ৩-৪ দিন পরপর আগুনের ধোঁয়া দিয়ে এসব বাক্স থেকে মৌমাছি সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রতিটি বাক্সের ভেতরে ৭-৮টি ফ্রেমে মৌচাক থাকে। এই মৌচাক একটি স্টিলের ড্রামের ভেতরে নিয়ে ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের মাধ্যমে মধু বের করা হয়। এসব মধু সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ড্রাম ভর্তি করে বাজারজাত করা হয়।

https://www.jagonews24.com/

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায়ই সরিষা চাষ হয়। এ বছর জেলায় ৬৩ হাজার ২ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। জেলার সাতটি উপজেলায় এ বছর ১২০ জন মৌ-চাষি প্রায় ১২ হাজার মৌ-বাক্স বসিয়েছেন। এসব মৌ-বাক্স থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কেজি মধু ২৫০-৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

দেড় মাস আগে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থেকে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দিঘী গ্রামে আসেন মৌ-চাষি (মধু সংগ্রাহক) সেলিম রেজা। তিনি সরিষা ক্ষেতের একপাশে ১০০টি মৌ-বাক্স বসিয়েছেন মধু সংগ্রহের জন্য। এরই মধ্যে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করেছেন। ভালো মূল্যও পেয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে মানিকগঞ্জে মৌ-চাষ ও মধু সংগ্রহ করছি। গত বছর চার মাসে প্রায় ৬০ মণ মধু সংগ্রহ করেছি। প্রতি কেজি মধু ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এসব মধু ডাবর, এপি ও এসিআই কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছি। প্রতি সপ্তাহে প্রতিটি মৌ-বাক্স থেকে দেড় থেকে ২ কেজি করে মধু পাওয়া যায়। মধুর স্বাদ ও মান অনেক ভালো।’

মানিকগঞ্জে সরিষা ও মধুতে লাভবান চাষিরা

মধু কিনতে আসা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতি বছর এভাবে মাঠ থেকেই ৭-৮ কেজি মধু কিনি। সময় ও প্রকারভেদে কেজি ৩০০-৪০০ টাকা নিয়ে থাকে। এই মধুর মান ভালো। সারাবছর ঘরে সংরক্ষণ করে নিজে খাই ও আত্মীয়দের দিই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. রবীআহ নূর আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘মৌ-চাষের কারণে পরাগায়নের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন ২৫-৩০ শতাংশ বাড়ে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ মধু পাওয়া যায়। এসব মধুর বাজারজাত সহজ করতে এবং ন্যায্যমূল্য পেতে পাইকারি ব্যবসায়ী বা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে মৌ-চাষিদের যোগসূত্র তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছি।’

মো. সজল আলী/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।