মিরসরাইয়ে লাউ চাষে লাভবান কৃষক
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় শীতাকালীন সবজি লাউ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি পাওয়ায় খুশি তারা। এতে উপজেলাজুড়ে ক্রমান্বয়ে লাউ চাষ বেড়ে চলেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার পাহাড়ি ও সমতল ভূমিতে শীতকালীন সবজি লাউ চাষ করা হয়েছে। উপজেলার আবহাওয়া লাউ চাষের অনুকূলে। প্রয়োজনীয় কৃষিসামগ্রী সহজলভ্য। এসব সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে কৃষকেরা লাউ চাষ করছেন। এক সময় যে জমিতে শুধু ধান চাষ হতো; সেখানে ধানের পরে লাউয়ের সাথে মিষ্টি কুমড়াও চাষ হচ্ছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, মঘাদিয়া, ওয়াহেদপুর ও সাহেরখালী ইউনিয়নে লাউ চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। চাষিরা বলেন, ‘অন্য সবজির চেয়ে লাউ চাষ লাভজনক।’
মধ্যম ওয়াহেদপুরের কৃষক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘৩২ শতক জমি বর্গা নিয়ে লাউ চাষ শুরু করি। লাউ চাষে আমাদের খরচ হয়েছে ১৭ হাজার টাকা। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছি। আরও কিছুদিন বিক্রি করতে পারবো।’
আমবাড়িয়ার কৃষক গোলাম মর্তুজা জানান, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় লাউ চাষের মাচাং তৈরির প্রয়োজনীয় শলাকা ও খুঁটি হাতের কাছে পাওয়া যায়। ফলে লাউ চাষের মাচাং তৈরি ও ক্ষেত পরিচর্যায় খরচ কম। জমি থেকে লাউ তুলে বাজারে নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। পাইকারেরাই জমির পাশ থেকে নিয়ে যায়।
কৃষক ইমাম হোসেন বলেন, ‘মৌমুসের শুরুতে প্রতি পিস লাউ পাইকারি ৬০-৭০ টাকা বিক্রি করেছি। এখন প্রতি পিস লাউ প্রথমে ৩৫-৪০ টাকা পাইকারি বিক্রি করেছি। ভালো দাম পাওয়ায় আমরা খুশি।’
উপজেলার সবচেয়ে বেশি লাউ চাষ করা হয়েছে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে। প্রায় ৩৫ ভাগ জমিতে লাউ চাষ করা হয়েছে। এখানকার পাইকারি সবজি বিক্রির বড় বাজার বসে বড়দারোগাহাটে। এখান থেকে পাইকররা কিনে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এ উপজেলায় শীতকালে প্রচুর লাউ চাষ হয়। গ্রীষ্মকালেও অনেক কৃষক লাউ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। শীতকালে প্রায় ২৭০ একর জমিতে লাউ চাষ হয়ে থাকে। লাউ চাষে যারা আসছেন; তাদের কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
এসইউ/জেআইএম