ঘেরের বাঁধ আয়ের উৎস

বাগেরহাটে বছরে সবজি উৎপাদন হাজার কোটি টাকার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বাগেরহাট
প্রকাশিত: ১০:০৮ এএম, ০৪ আগস্ট ২০২৪

বাগেরহাটে চিংড়ি ঘেরের বাঁধ এখন কৃষকের আয়ের উৎস। এসব বাঁধে চিংড়ি চাষিরা শাক-সবজি চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। মাছের পাশাপাশি সবজির ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রতি বছর বাগেরহাটের ৯ উপজেলার এসব ঘেরের বাঁধে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদিত হচ্ছে বলে জানায় বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

জানা গেছে, জেলার মোরেলগঞ্জ, ফকিরহাট, মোল্লাহাট, চিতলমারী, রামপাল, মংলা ও শরণখোলা উপজেলায় ৮৫ হাজারের বেশি চিংড়ি ঘের আছে। এসব ঘেরের আইল বা বাঁধ দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকতো। তবে ঘেরের বাঁধে এখন চাষিরা পুঁইশাক, চালকুমড়া, ঢ্যাঁড়শ, পেঁপে, লাউ, টমেটো, করলা, শিম, বরবটি, বাঙ্গি, কলা, মিষ্টি কুমড়া, লালশাকসহ অন্তত ২০-২৫ রকমের শাক-সবজি চাষ করছেন। চিংড়ি চাষিদের এ সবজি চাষে উৎসাহিত করতে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এ ছাড়া চিংড়ি চাষিদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহ-নেওয়াজ জানান, চিংড়ি চাষিরা এ সহায়তা পেয়ে বছরের তিনটি সবজি মৌসুমে ঘেরের আইলে ২০ রকমের শাক-সবজি চাষ করেন। একই সঙ্গে ঘেরে চিংড়ি চাষও অব্যাহত রেখেছেন। শুধু ঘের থেকেই বছরে এক-দেড় হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদন করছেন চাষিরা।

বাগেরহাটে বছরে সবজি উৎপাদন হাজার কোটি টাকার

এনায়েত ঘরামী নামে এক সবজি চাষি জানান, তারা ৩-৪ বছর ধরে ঘেরের আইলে নতুন পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছেন। আইলে শাক-সবজির চাষ করে ভালো ফলনও পাচ্ছেন। চিংড়ির পাশাপাশি বিনা খরচে সবজি চাষ হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। এ সবজি চাষ দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে।

বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় ঘেরের সবজিকে কেন্দ্র করে কচুয়ার গজালিয়া, কচুয়া, মঘিয়া, ধোপাখালি, সাইনবোর্ড, বাঁধাল, সদরের সিঅ্যান্ডবি বাজার, চুলকাঠি, ষাটগম্বুজ, ব্যারাকপুর, পোলেরহাট, বেমরতা, চিতলমারী সদর, খাসেরহাট, খালিশপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বাজার গড়ে উঠেছে। এখান থেকে প্রতিদিন অন্তত ২০ লাখ টাকার সবজি রাজধানীসহ বিভিন্ন বড় শহরে যাচ্ছে।

বাগেরহাটে বছরে সবজি উৎপাদন হাজার কোটি টাকার

বাগেরহাট সদরের সিঅ্যান্ডবি বাজারে কথা হয় ঢাকার কারওয়ান বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, বাগেরহাটের মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় সবজির বাজার। এখান থেকে প্রতি বাজারে শতাধিক ট্রাক যচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।

বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, ‘এলাকায় ব্যাপকহারে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ির আবাদ হওয়ায় সবজি চাষের জমির পরিমাণ কমে গেছে। মাছের ঘেরের আইলে সুষ্ঠুভাবে সবজি চাষ উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগের পাশাপাশি কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও কাজ করে যাচ্ছে। সঠিকভাবে পরিকল্পনা নিয়ে সহায়তা করতে পারলে এ অঞ্চলের ২ লক্ষাধিক চিংড়ি ঘেরের আইলে চাষের মাধ্যমে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার সবজি উৎপাদন সম্ভব।’

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।