কলা চাষে লাভের মুখ দেখছেন আব্দুস সোবহান

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৪

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। অন্য ফলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ পাওয়ায় কলা চাষাবাদে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। অনেকেই কলা চাষাবাদ করেই পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করছেন। এমনই একজন কৃষক আব্দুস সোবহান (৬০)। কৃষির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থেকে সোনারগাঁয়ের সনমান্দী ইউনিয়নের মশুরাকান্দা গ্রামে ৩ বছর আগে নিজের সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে কলা গাছের বিশাল বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি।

সরেজমিনে জানা যায়, নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও অধিকাংশ কলা গাছে ফল ধরেছে। তাই তার মুখে তৃপ্তির হাসি দেখা গেছে। প্রতিনিয়ত আশপাশের গ্রাম থেকে মানুষ দেখতে আসেন তার এ বাগানে। অনেকে আবার তার কাছ থেকে কলা চাষাবাদ করার পরামর্শও নিচ্ছেন। নিয়মিত গাছে সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ পরিচর্যা করে আসছেন তিনি।

কলা চাষে লাভের মুখ দেখছেন আব্দুস সোবহান

আব্দুস সোবহান বলেন, ‘তিন জাতের প্রায় ১ হাজারের বেশি কলা গাছ আছে জমিতে। ফলন ভালো হলেও গতবারের চেয়ে কিছুটা কম। ঝড়ে একশ’র বেশি গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারপরও আমি বেশ খুশি। সোনারগাঁয়ে লিচু চাষ বেশি হলেও কলা গাছে কম খরচে তুলনামূলক বেশি লাভবান হওয়া যায়। লিচু গাছে ফলন পেতে প্রায় ১ বছর সময় লাগে। কলা গাছে ৩ মাস পর পর ফলন পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, ‘কলা গাছ চাষাবাদে বিঘাপ্রতি মাত্র ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আর লাভের অঙ্ক হিসাব করলে বছরে প্রতি বিঘা থেকে এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভ হয়। প্রতি কাঁদি কলা ৩০০-৬০০ টাকায় বিক্রি করে থাকি। বছর শেষে যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে পরিবার নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারি। অধিকাংশ সময় কলা বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না। পাইকাররা বাগানে এসে কলা কিনে নিয়ে যান।’

কলা চাষে লাভের মুখ দেখছেন আব্দুস সোবহান

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষিকাজের সঙ্গে ২০ বছর ধরে জড়িত থাকলেও কলা গাছের বাগান করেছি ৩ বছর ধরে। ১৯৯১ সালে বিদেশ গিয়ে এই জমি কিনি। তখন থেকেই আমার কৃষির প্রতি অনেক আগ্রহ ছিল। তাই ১৫ বছর পর দেশে ফিরেই কৃষিকাজে জড়িয়ে পড়ি। এরই ধারাবাহিকতায় লিচু চাষাবাদের পাশাপাশি কলা চাষাবাদ করছি।’

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা বলেন, ‘উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কলার আবাদ হয়েছে ১৬ হেক্টর। চাপা কলা ১২ হেক্টর, আনাজি কলা ৪ হেক্টর। সাধারণত বিচ্ছিন্নভাবে আবাদ হয়। বর্তমানে কলা চাষ বেড়েছে। কলা চাষে লাভ হওয়ায় চাষিরা বেশি ঝুঁকছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে তাদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ করা হয়। নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় কলা সরবরাহ করা হচ্ছে।’

রাশেদুল ইসলাম রাজু/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।