শার্শায় লাখ লাখ টাকার মুখি কচু বিক্রি করেন কৃষকেরা
যশোরের সবচেয়ে বড় ও পাইকারি মুখি কচুর হাট শার্শা উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের বাসাবাড়ি। এই হাটে প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার মুখি কচু বিক্রি করেন কৃষকেরা। কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য তারা সরাসরি হাটে তোলেন। পাইকারি দামে বিক্রি করেন দেশের জেলা থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। এখানকার টাটকা কচু ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার চাহিদা মেটায়।
জানা যায়, বাসাবাড়ি বাজারের উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিম দিকে রাস্তার দুই পাশে কৃষকেরা শত শত বস্তায় তাদের চাষের কচু নিয়ে বসে আছেন ক্রেতাকে দেখানোর জন্য। দাম মিললেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। পুরো বাজারটি কচুতে জমজমাট বা পরিপূর্ণ।
কচু বিক্রি করতে আসা নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলার সেরা কচু বিক্রির হাট এটি। এখানে ভালো দামে কচু বিক্রি করতে পারেন। কৃষকেরা সরাসরি পাইকারি দামে কচু বিক্রি করে ভালো লাভবান হন। তাছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা ভালো।
আরেক চাষী আবু তালেব বলেন, ‘পাশের উপজেলা ঝিকরগাছা থেকে কচু বিক্রি করতে আসছি। বাসাবাড়ি হাটে বাইরের ব্যবসায়ীরা থাকেন এবং প্রচুর চাহিদা থাকে। যার ফলে কচু বিক্রির সাথে সাথে আমাদের টাকাও পেয়ে যাই।’
কয়েকজন চাষি জানান, গত ৪-৫ বছর এখানে কচু বিক্রি করতে আসেন। হাটে বাড়তি কোনো ঝামেলা নেই। কখনো কচু বাড়িতে ফেরত নিতে হয় না। এ হাটে এলে বিক্রি হয় এবং দামও ভালো পাওয়া যায়। ভালো মানের কচু পাইকারি দাম দিচ্ছে ৫৩-৬০ টাকা কেজি দরে। তবে কখনো কম-বেশি হয়।
আরও পড়ুন
ব্যবসায়ীরা জানান, সরাসরি কৃষকদের বাছাইকৃত কচু সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। এ হাটে উপজেলার সব এলাকার চাষি কচু বিক্রি করতে আসেন। বিধায় দেখেশুনে কচু কেনা সম্ভব হয়। সতেজ ও টাটকা কচুর জমজমাট পরিস্থিতি বিরাজ করে। ফলে প্রতিনিয়ত এই হাট থেকে রাজশাহী ও রংপুর পাঠানো হয়ে থাকে।
স্থানীয় আড়ৎদার বাবু মিয়া জানান, কৃষকেরা সরাসরি জমির কচু তোলার পরই হাটে নিয়ে আসেন। একদিকে যেমন বিক্রি করতে নির্দিষ্ট জায়গা পেয়েছেন; তেমনই ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন গ্রেডের কচু বাছাই করে সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বিপুল বলেন, ‘কৃষকের ভাগ্য বদলে কাজ করছে বাসাবাড়ি পাইকারি মুখি কচুর হাটটি। ইউনিয়নে এমন একটি হাটের ফলে নিজামপুর, ডিহি, লক্ষণপুর ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নসহ পাশের ঝিকরগাছা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কৃষকেরা সরাসরি পাইকারি বাজারে বা হাটে কচু বিক্রি করতে পারছেন। বাজারজাতের সুবিধার্থে আগামীতে ব্যাপকহারে কচু চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘মুখি কচু একটি লাভজনক চাষ। উপজেলাজুড়ে মোট ১৮০ হেক্টর জমিতে মুখি কচুর চাষ হচ্ছে। তাছাড়া আগামীতে এ উপজেলায় ব্যাপকভাবে মুখি কচুর চাষ বৃদ্ধি পাবে।’
মো. জামাল হোসেন/এসইউ/এএসএম