জলবায়ু পরিবর্তনে ধান চাষে নতুন সমস্যা

সমীরণ বিশ্বাস
সমীরণ বিশ্বাস সমীরণ বিশ্বাস , কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ
প্রকাশিত: ১২:১৬ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২৪

১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা ধানের ফলনের জন্য উত্তম! ধানের থোর অবস্থায় ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ধানের ফুল অবস্থায় ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা চলে গেলে; থোরের ভেতর ভ্রুণের গর্ভপাত হতে পারে। ফলে ধানের থোর থেকে ফুল বের হওয়ার পরপরই সাদা মরা অপরিপক্ক মন্জুরী দেখা যায়!

ঠিক একইভাবে ফুল ফোটার সময় যদি তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায় তা হলেও ধানের ফুল বা মন্জুরী সাদা হয়ে মরে যেতে পারে। ধানের থোর বা ফুল অবস্থায় তাপমাত্রা যদি ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি চলে যায় তা হলেও ধান চিটা হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন

এছাড়া অনাকাঙ্খিত ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ধানের থোর ও ফুল অবস্থায় আঘাতজনিত ইনজুরির কারণেও ধান সাদা চিটা হয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ কোল্ড ইনজুরি বা হীট ইনজুরির কারণেও ধানের থোরের মধ্যে ভ্রুণের গর্ভপাত হয়ে ছড়ার আংশিক সাদা হয়ে মড়া বের হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ধান ক্ষেতে কোনো ঔষধ দিয়েও লাভ হয় না।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনাকাঙ্খিত ঝড়- শিলাবৃষ্টি, অসময়ে অতি শীত, অতি গরম ধান চাষে কৃষকদের নতুন নতুন সমস্যা, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

তাই ধান চাষীদের জন্য পরামর্শ
ধানের জন্য অসহনীয় তাপমাত্রা হলো ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি। ফুল ফোটার সময় যদি এই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ধানের জমিতে এক দুই ঘণ্টা বিরাজ করলে মাত্রাতিরিক্ত চিটা হয়ে যাবে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দিনের তাপমাত্রা প্রায়ই ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার চেয়ে বেড়ে যেতে পারে।

কৃষকদের করণীয়
১. উন্নত ও প্রতিরোধী জাত লাগানো ২. রোগ মুক্ত বীজ বপন, ৩. সুষম সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা, ৪. ধানের থোর ও ফুল অবস্থায় ক্ষেতে পানি নিশ্চিত করা বা রাখা, ৫. জমিতে সর্বদা পানি রাখুন, ৬. গর্ভাবস্থা থেকে দুধ অবস্থা পর্যন্ত ২২ থেকে ২৫ দিন জমিতে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি ধরে রাখুন, ৩/এমওপি সার ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম মিশিয়ে ৫ শতাংশ হিসেবে জমিতে স্প্রে করুন অথবা বিঘাপ্রতি ৫ কেজি এমওপি সার প্রয়োগ করুন, ৭. ধানের ফুল অবস্থায় স্প্রে করার প্রয়োজন হলে অবশ্যই পড়ন্ত বিকালে বালাই নাশক স্প্রে করুন, ৮. সাধারণত সকাল সাতটা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ধানের পরাগায়ন ঘটে, এই অবস্থায় স্প্রে করলে পরাগায়নের সমস্যা হয় এবং ধানের চিটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেজন্য বিকালে স্প্রে করতে হবে।

লেখক: কৃষি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, ঢাকা।

আরও পড়ুন

কেএসকে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।