লালমনিরহাটে কিনোয়া চাষে সফল প্রবাসী রাজু
লালমনিরহাটে প্রথমবারের মতো ৭০ শতক জমিতে সুপার ফুড কিনোয়া চাষ করে সফল আমেরিকা প্রবাসী চাষি রেজাউল করিম রাজু। নতুন ফসলটি চাষের মধ্য দিয়ে উত্তরের জেলায় কৃষকেরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। উত্তর আমেরিকার দানাদার ফসল কিনোয়া থেকে উচ্চ আমিষ সমৃদ্ধ খাবার তৈরি হয়।
জানা যায়, লালমনিরহাটে কিনোয়া চাষ শুরু করেন রেজাউল করিম রাজু। তিনি হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের আলতাফ হোসেনের ছেলে। আমেরিকা থাকাকালীন কিনোয়া চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। বাংলাদেশে ফিরে পঞ্চগড় থেকে ২ কেজি বীজ সংগ্রহ করেন। পরে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু করেন।
প্রবাসী রেজাউল করিম রাজু বলেন, ‘আমেরিকায় থাকাকালীন কিনোয়া চাষ দেখি। পরে দেশে ফিরে ইউটিউব দেখে চাষপদ্ধতি শিখি। প্রথমবার ৭০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। ফসল কাটা হয়ে গেছে। মাড়াইয়ের কাজ চলছে। ফলন ভালো হয়েছে। বিঘায় ৪-৫ মণ আসবে। চাষ করা খুবই সহজ। বাজারে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। প্রতি বিঘায় ১৫-২০ হাজার টাকার মতো খরচ করে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, কিনোয়া স্বল্পমেয়াদী ফসল। রবি শস্যের দানাদার ফসল। শস্যদানার রং সাদা, লাল ও কালো। ২০২১-২২ সালে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর এলাকায় কিনোয়া চাষ করা হয়। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। একসময় কৃষকেরা তামাক বাদ দিয়ে কিনোয়া চাষের দিকে ঝুঁকবেন বলে আশা কৃষি বিভাগের।
আরও পড়ুন
স্থানীয় সোহাগ হোসেন বলেন, ‘ফসলটির সাথে আমরা অপরিচিত। জানতে পারলাম ফসলটির অনেক দাম ও চাহিদা বেশি। এটি খেলে নাকি ক্ষুধা কম লাগে। বিমানের পাইলটরা এটি খায়। আমরা ক্ষেতে এসে ফলনটি দেখেছি। অনেক সুন্দর হয়েছে। আগামীতে আমার জমিতেও লাগানোর চেষ্টা করবো।’
আকবর আলী বলেন, ‘জমির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। দেখে মনে হলো বতুয়ার শাক। এত বতুয়া শাক দিয়ে কী হবে? পরে দেখলাম গাছের মাথায় থোকায় থোকায় দানা ধরেছে। এটি নাকি কিনোয়া ফসল। ফসলটি যদি লাভজনক হয়, তাহলে আমরা আগামীতে চাষাবাদ করবো।’
সোলেমান আলী বলেন, ‘আমি শুনেছি তিন মাসে ফসলটি ঘরে তোলা যায়। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৪ মণ। প্রতি মণে ২০ হাজার টাকা হলে ৪ বিঘায় ৮০ হাজার টাকা পাওয়া গেলে অনেক লাভ। আমি রাজু ভাইয়ের কিনোয়া ক্ষেতে দেখাশোনা করছি।’
হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন মিয়া বলেন, ‘হাতীবান্ধার আমেরিকা প্রবাসী রেজাউল করিম রাজু প্রথমবারের মতো কিনোয়া চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন। জেলায় এটি নতুন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমরা ক্ষেত পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আগামীতে আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করবো।’
রবিউল হাসান/এসইউ/জেআইএম