পরিত্যক্ত টায়ারে নান্দনিক ছাদ বাগান

মামুনূর রহমান হৃদয়
মামুনূর রহমান হৃদয় মামুনূর রহমান হৃদয় , ফিচার লেখক
প্রকাশিত: ০১:৩৭ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩

বাড়ির ছাদে ছায়াঘন পরিবেশ। সেখানে শোভা পাচ্ছে বিশালদেহী এক আমগাছ। শীতকালের শেষে সেই গাছে ধরতে শুরু করবে মুকুল। এদিকে পুষ্টির জোগানে রয়েছে লেবু, ঢ্যাঁড়শ, করলা, পেঁপে, বরবটিসহ সবজির গাছ। আরও আছে রং-বেরঙের ফুল।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার লেক সার্কাস রোডের ধুপছায়া অ্যাপার্টমেন্টের ছাদ বাগানে গিয়ে এ সবুজের দেখা মেলে। ছাদ বাগানের উদ্যোক্তা শেখর মণ্ডল। মুরারী মোহন মণ্ডল ও অনিতা রানী মণ্ডলের বড় ছেলে তিনি। ছোটবেলা থেকেই গাছপালা ও প্রকৃতির প্রতি তার টান।

in-(3).jpg

শেখর মণ্ডল বলেন, ‘আমি পরিবারসহ এখানের চিলেকোঠায় ভাড়া থাকি। ছাদে থাকার সুবাদে দিনের বেলা দরজা দিয়ে রোদ ঘরে উঁকি দেয়। প্রথমদিকে দরজার কাছে ছাউনির বন্দোবস্ত করলেও ঝড়ো বাতাসে প্রায় সময় সেটি খুলে যায়। সেই থেকে চিন্তা করলাম স্থায়ী কিছু করা যায় কি না। তখন একটি আম বীজ রোপণ করলাম। সেই বীজটি আজকের বিশালদেহী এই আমগাছ।’

আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বাড়ছে ড্রাগনের ফুল ও ফল

বাগানের একটি মজার বিষয় হলো, এখানে টবের বদলে প্রাধান্য পেয়েছে পরিত্যক্ত টায়ার। সুনিপুণ ভাবে কেটে টায়ারগুলোকে দেওয়া হয়েছে টবের আকৃতি। মাটির বদলে ব্যবহার করা হয়েছে নারিকেলের ছোবড়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পরিত্যক্ত টায়ারের অনেক সুবিধা। প্রথমত সাধারণ টবের চেয়ে অনেক বেশি টেকসই। বছরের পর বছর নানা শস্য ফলানো যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকায় মশার বংশ বিস্তারের সুযোগ নেই। নারিকেলের ছোবড়া পচে মাটির রূপ নিয়েছে। পাশাপাশি জৈব সারের ভূমিকা পালন করছে।’

in-(3).jpg

ছাদের একটি অংশজুড়ে গাছগুলোকে সাজানো হয়েছে সুশৃঙ্খলভাবে। ছাদ বাগানে আছে মানকচু, জাম্বুরা, ব্রাহ্মী শাক, চুইঝাল, কাঁচামরিচসহ অনেক কিছু। শেখর মণ্ডলের শখের বাগান থেকেই মিটে যাচ্ছে ৮০ শতাংশ পুষ্টির চাহিদা। ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে আছে ঘৃতকুমারী এবং নিমপাতা।

ছাদ বাগানের যত্নে কী করেন? জানতে চাইলে শেখর মণ্ডল বলেন, ‘পানি দেওয়া ছাড়া তেমন কিছুই করার দরকার হয় না। তবে পরিবারের ফেলে দেওয়া পচনশীল যা কিছু আছে; সেগুলোই টবের ওপর ছিটিয়ে দিই। বাড়তি কোনো সারের প্রয়োজন নেই।’

in-(3).jpg

আরও পড়ুন: কমলা চাষে সফল হলেন আব্দুল হালিম

গাছের প্রতি ভালোবাসা ও ছাদ বাগান সম্পর্কে শেখর মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিজহাতে শাক-সবজি, ফুল-ফল ফলানোর আনন্দটা অন্যরকম। বৃষ্টির দিনে গাছের পাতা বেয়ে পানি পড়ার দৃশ্য আমাকে মুগ্ধ করে। পাতার ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো ঘরে আলো-ছায়া তৈরি করে। তাতে গ্রামীণ পরিবেশের ছোঁয়া পাই। বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে ছাদ-কৃষির বিকল্প নেই। এটি পরিবেশের জন্য ভালো, মানুষের জন্যও।’

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।