টবে মরিচ চাষ করার নিয়ম

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২৩

দৈনন্দিন রান্নায় মরিচ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তাই কম পরিশ্রমে বাড়ির ছাদে, বারান্দায় অথবা আঙিনায় মরিচ চাষ করতে পারেন। এটি চাষে খরচও অনেক কম। একটু রোদ আর সামান্য যত্নে দ্রুত বেড়ে ওঠে মরিচ গাছ। বাসার বারান্দায় বা ছাদে এমন স্থান বেছে নিতে হবে, যেখানে আলো-বাতাস আছে। মরিচ ছায়ায়ও ভালো হয়। তবে মাঝে মাঝে রোদে দিতে হবে বা জানালার কাছে রাখতে হবে।

ছাদে অথবা বারান্দায় মরিচ চাষের ক্ষেত্রে মাটি অথবা প্ল্যাস্টিকের টব ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া পলিব্যাগ, টিনের কৌটা বা প্ল্যাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। মরিচ গাছের জন্য মাঝারি আকৃতির টব হলেই চলে। মাঝারি আকৃতির টবে চারটি মরিচ গাছের চাষ করা সম্ভব।

চাষের জন্য দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। এছাড়া সামান্য ক্ষারীয় মাটি ব্যবহার করা যেতে পারে। দোআঁশ মাটির সাথে জৈব সার ভালো করে মিশিয়ে টব ভরুন। টবের মাটিতে যথেষ্ট পানি দিন, যাতে মাটি ভেজা ভেজা থাকে। লক্ষ্য রাখতে হবে, মাটি যেন একেবারে শুকিয়ে না যায়। আর্দ্র স্থানে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: আষাঢ় মাসে পাট চাষে যা করবেন

বীজ বপন করার আগে অবশ্যই ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সাধারণত মরিচ চাষের উপযুক্ত সময় হলো মে-জুন। এছাড়া শীতকালের শুরুতে অক্টোবর মাসেও মরিচের বীজ বপন করা যায়। এসময় বীজ বপন করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

বপনের ক্ষেত্রে টবের অথবা উপযুক্ত পাত্রের মাটিতে শুকনা বীজ ছড়িয়ে দিন বা বুনে দিন। কিছুদিন পরে দেখা যাবে বেশকিছু চারা গাছ গজিয়েছে। সেখান থেকে শক্তিশালী চারাগুলো রেখে বাকি চারাগুলো উপড়ে ফেলুন। শুকনো মরিচের ভেতরে যে বীজ থাকে সেগুলোও বের করে নিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

প্ল্যাস্টিকের কনটেইনার ব্যবহার করলে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়ার জন্য আগেই কনটেইনারটিতে কয়েকটি ছোট ছিদ্র করে নিতে পারেন। গাছের গোড়ায় দিনে একবার অবশ্যই পানি দেবেন। সব সময় সঠিক নিয়মে পরিমাণমতো পানি দিন। পানি দিলে অনেক সময় গাছ হেলে যেতে পারে। তাই গাছের গোড়ায় কাঠি বেঁধে দিন। গাছে পানি দেওয়ার সময় লক্ষ্য রাখুন পাতা যেন ভিজে না যায়। পাতা ভিজে গেলে রোগবালাই হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পানি জমে গাছ মারা যেতে পারে; তাই টব থেকে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন।

আরও পড়ুন: আতিয়ারের ‘ব্রুনাই কিং’ ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে

যখন মরিচের চারা বড় হয়, সে সময়ে মাটি আর্দ্র রাখা খুবই জরুরি। যথেষ্ট আলো বাতাস ও পানির প্রয়োজন হয় মরিচ গাছ বাড়ার জন্য। এদের ছাদে, বারান্দা অথবা জানালার পাশের রৌদ্রোজ্জ্বল স্থানে রাখুন। খুব বেশি রোদ যেন না লাগে। সকাল অথবা বিকেলে মরিচ গাছের যত্ন নিন।

মরিচের কচি চারার ডগা খাওয়ার জন্য পিঁপড়া বা ছোট পাখি আসে। তাই টবের চারপাশে কীটনাশক চকের দাগ দিয়ে রাখতে পারেন অথবা পাউডার জাতীয় কীটনাশক দিতে পারেন। পাখির হাত থেকে বাঁচার জন্য শক্ত নেট ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া পানিতে কয়েক ফোটা তরল সাবান মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে পারেন। অথবা পোকামারা কীটনাশক ব্যবহার করুন।

মরিচ গাছে ফুল এলে দু-তিন দিন পরই ফুল ঝরে যাবে। ধীরে ধীরে মরিচ বড় হবে। কিছুদিন পর থেকে মরিচ সংগ্রহ করতে পারেন। মরিচ বড় হলে টান দিয়ে না ছিড়ে কাঁচি দিয়ে সাবধানে কেটে নিন। তাহলে গাছের কোনো ক্ষতি হবে না। গাছ বেশি পরিমাণ ফলন দেয়।

আরও পড়ুন: ভারতীয় মিষ্টি আঙুর চাষে সফল লাভলী

একটি মরিচ গাছ থেকে মোটামুটি দুই দফায় ভালো মরিচ পাওয়া যায়। ঝাল মরিচের একটি গাছে এক দফায় কমপক্ষে ৫০ থেকে ৭৫টি করে, দুই দফায় ১০০ থেকে ১৫০টি মরিচ পাওয়া সম্ভব। যার ওজন প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম।

পাকা মরিচ ১৫ দিন পরপর সংগ্রহ করা যায়। মরিচ গাছ নির্বাচন করে পরিপূর্ণ পাকা মরিচ সংগ্রহ করতে হবে। তারপর ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে বীজ বের করে নিতে হবে। বীজ শুকিয়ে আর্দ্রতা ৬-৮ শতাংশ করে নিয়ে বায়ুরোধী পাত্র বা পলিথিন প্যাকেটে সংরক্ষণ করতে হবে।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।