উপকূলে সূর্যমুখী চাষ

সেচ সুবিধা না থাকায় সংকটে চাষিরা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী
প্রকাশিত: ১১:৩৯ এএম, ০৯ এপ্রিল ২০২৩

পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে তেল জাতীয় ফসল সূর্যমুখীর চাষাবাদ। চাহিদা থাকায় এবং দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। পাশপাশি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সহযোগিতা ও পরামর্শ। তবে সেচ সুবিধা না থাকায় অনেক এলাকার কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত ফলন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত বছর পটুয়াখালী জেলায় ৭৭৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়। এবার ১ হাজার ৭৮ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতেই হাইব্রিড জাতের সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে।

jagonews24

জানা যায়, আমন মৌসুমে জেলার শতভাগ জমিতে ধানের আবাদ হলেও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকার জমি থাকছে অনাবাদি। সেসব অনাবাদি জমিতে এবার দেখা মিলছে আকর্ষণীয় তেল ফসল সূর্যমুখীর চাষ। সবুজ গাছের মাথায় হলুদ ফুল যেমন সবাইকে আকর্ষণ করে; তেমনই গুণগত মানের দিক থেকে অন্য সব ভোজ্যতেলের মধ্যে সূর্যমুখীর আছে বাড়তি বৈশিষ্ট্য। তাই তো দিন দিন এ ফসলের আবাদ বাড়ছে।

আরও পড়ুন: যমুনার বালুচরে সূর্যমুখীর হাসি

পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কৃষক মোতাহার হাওলাদার জানান, গত বছর তিনি ১০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করেন। এবার ২০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সার, বীজ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে সেচ দিতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। আশপাশের খালগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত সেচ দিতে পারেননি। সেচের সুবিধা থাকলে আরও বেশি জমিতে চাষাবাদ করতেন।

jagonews24

একই এলাকার কৃষক খালেক মৃধা বলেন, ‘সূর্যমুখীর বীজের অনেক চাহিদা। বাড়ি থেকেই বীজ কিনে নেয়। তবে এবার পানি দিতে না পারায় ফুল খুব একটা বড় হয়নি। এরপরও ফলন যা হয়েছে তাতে ভালোই লাভ হবে। আমার দেখাদেখি এ এলাকার অনেকেই এখন সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।’

পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম মল্লিক বলেন, ‘আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য জেলায় তেল জাতীয় ফসল চাষে কৃষকদের বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। পাশপাশি ব্লক পর্যায়ে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তবে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে পারলে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা সম্ভব হতো।’

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা

উপকূলীয় এলাকার কৃষি ব্যবস্থাপনার এ সফলতা ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে মরে যাওয়া খাল ও জলাধার দ্রুত খনন করে মিষ্টি পানির সংরক্ষণের ব্যবস্থা করার দাবি এ অঞ্চলের কৃষকদের।

আব্দুস সালাম আরিফ/এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।