আনারসে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
বান্দরবানে আনারসের ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দিত চাষিরা। আনারস চাষে তারা ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। স্বাদ, সুবাস ও আকারে বড় হওয়ায় প্রায় দেশজুড়েই রয়েছে বান্দরবানের এই আনারসের জনপ্রিয়তা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের পাশাপাশি আকারে অনেক বড় হওয়ায় বাজারে এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে এ আনারসের। তাই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব আনারস।
সদর উপজেলার লাইমি পাড়া, ফারুক পাড়া, গেসমনি পাড়া, স্যারন পাড়া, চিম্বুক এলাকা, রুমা উপজেলার বেথেল পাড়া, মুনলাই পাড়া ও রোয়াংছড়ি উপজেলার সুয়ানলু পাড়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ আনারস চাষ হয়। স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে এ আনারস ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
বান্দরবান থানচি সড়কের গ্যাসমনি পাড়ার আনারস চাষি জিংহ্লা বম জানান, তিন একর জমিতে আনারসের চাষ করেছেন তিনি। একর প্রতি ২০ হাজার আনারসের চারা রোপণ করা হয়। এতে একর প্রতি এক লাখ টাকা খরচ হয়।
এবার ভালো ফলন ও আকারে বড় হওয়ায় পাইকারেরা প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে এই মৌসুমে একর প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হতে পারে। এছাড়া নতুন বাগানগুলোতে এবছর গাছ প্রতি ১টি আনারস পাওয়া গেলেও আগামী বছর ২টি করে আনারস পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
সুয়ালক ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার লাল হাই বম জাগো নিউজকে জানান, কয়েক একর পাহাড়ি জমিতে রাংগুয়াই আম (বারোমাসি প্রজাতি) ও আনারসের চাষ করেছেন তিনি। প্রতি মণ আম তিন থেকে চারশ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। এতে লাভ্যাংশ পাওয়া দূরের কথা কীটনাশক ব্যয় পর্যন্ত পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।
তবে আনারসের ভালো ফলন হওয়ায় কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে প্রত্যাশা তার। তাই এলাকার অনেকেই আগামী বছর থেকে আনারস চাষের দিকে ঝুঁকবেন বলে জানান তিনি। বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ৪ হাজার ৪৭ হেক্টর জমিতে আনারসের আবাদ করা হয়েছে, বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ওমর ফারুক জাগো নিউজকে বলেন, উপজেলায় ২২৫ হেক্টর জমিতে জায়ান্টকিউ প্রজাতির আনারস চাষ করা হয়েছে।
এতে ৫ হাজার ১৬০ মেট্রিক টান ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্বাদ, সুবাস ও আকারে বড় হওয়ায় এর প্রচুর চাহিদাও রয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ের ঢালুতে আনারস চাষ উপযোগী ও লাভজনক ফসল হওয়ায় এই ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন চাষিরা।
নয়ন চক্রবর্তী/এমএমএম/জেআইএম