শখের বশে মোশাররফের আঙুর চাষ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের মোশাররফ হোসেন শখের বশে আঙুর চাষ করেন। দ্বিতীয়বারের মতো পরীক্ষামূলক চাষ করে সফল হয়েছেন তিনি। গাছে থোকায় থোকায় আঙুর ফল আসায় আনন্দিত মোশারফ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বসত ঘরের একপাশে খালি জমিতে সাদা জাতের আঙুর ফলের গাছ। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে আঙুর ফল। এক একটি থোকায় প্রায় ১৫০-১৭০ গ্রামের মতো ফল ধরেছে, দেখতেও বেশ আকর্ষণীয়। তার চাষাবাদকে এলাকার সবাই বাহবা দিচ্ছে।
পাশের বাড়ির গ্রাম্য চিকিৎসক সঞ্জায় গোয়ালা জাগো নিউজকে বলেন, তার আঙুর ফলের চাষাবাদ প্রশংসার দাবি রাখে। গাছে আঙুর ফল দেখে ভালো লাগছে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই আঙুরের ফলন হয়েছে এটা অবাক হওয়ার বিষয়।
তার বন্ধু শুভ যাদব জাগো নিউজকে বলেন, এলাকার এই মাটিতে আঙুর চাষ হয় কিনা এমন চিন্তা মাথায় নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে মোশাররফ আঙুর চাষ করেন। তিনি সফল হয়েছেন। ওই এলাকায় ব্যাপক হারে আঙুর চাষের সম্ভাবনা রয়েছে।
আঙুর চাষি মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, প্রচলিত অভিজাত ফলের ভেতর আঙুর ফল অন্যতম। মূলত অত্যন্ত রসালো এই ফল স্বাদের কারণে আমাদের নিকট বেশি প্রিয়। তাছাড়া এই ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী। বাজারে গেলেই যেন ফরমালিনযুক্ত ফল পাওয়া যায়। সেই কথা মাথায় রেখে আমার এই উদ্যোগ।
আমি কুলাউড়া শহরের আমার এক আত্মীয় বাড়ি থেকে চারা গাছ এনে চাষ করেছিলাম। তবে এই ফল চাষের প্রধান সমস্যা হচ্ছে ফল টক হয়ে যায়। প্রথমবার ফল বেশি টক ছিল, এবছর স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে কিছু তথ্য পেয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ায় এবার অনেকটাই টক কমেছে।
বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার ইচ্ছা আছে কিনা জানতে চাইলে মোশাররফ বলেন, যদি কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষের পদ্ধতিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় তবে ইচ্ছে আছে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার।
এ নিয়ে কথা হলে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আঙুর ফল চাষের জন্য আমাদের হাতে সরকার থেকে তেমন কিছু আসে না ।
তবে কেউ যদি চাষ করে তাহলে যতটুকু সম্ভব আমি তাকে এই ব্যাপারে সহযোগিতা করব এবং সরকার থেকে যদি কোন সাহায্য আসে, তা তিনি পাবে। তিনি আরও বলেন, আঙুর ফল দো-আঁশযুক্ত লালমাটি, পাহাড়ের পাললিক মাটি এবং জৈবিক সার সমৃদ্ধ কাঁকর জাতীয় মাটিতে ভালো জন্মে।
ফল টক বা মিষ্টি মাটি ভেদে এবং আবহাওয়ার কারণে হয়ে থাকে। তবে সঠিক পদ্ধতিতে চাষ করে টকের পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। আঙুর ফলের চাষ করে যারা বেকার রয়েছেন তারা বেকারত্ব দূর করতে পারেন। কম খরচে সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আব্দুল আজিজ/এমএমএফ/জেআইএম