১৫ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রির আশা ইমরানের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০২:১২ পিএম, ১২ মার্চ ২০২২

অডিও শুনুন

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রহমতগঞ্জে পল্লিকানন নার্সারিতে এবছর স্ট্রবেরি চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন মো. রেজাউল ইসলাম ইমরান। এবছর বেড পদ্ধতিতে সুস্বাদু এবং রসালো রাবিটিন নামক স্ট্রবেরির বাম্পার ফলনে চমক দেখিয়েছেন তিনি। রাবিটিন জাতের স্ট্রবেরির স্বাদ এতোই চমৎকার যেকোনো জাতের স্ট্রবেরিকে হার মানাবে।

jagonews24

সদর উপজেলার রহমতগঞ্জ গ্রামের হাফেজ মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে রেজাউল ইসলাম ইমরান। ২০১৭ সালে সিরাজগঞ্জ ইসলামিয়া সরকারি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে তিনি কৃষি কাজেযুক্ত হন।

জানা যায়, স্ট্র্রবেরি মূলত শীতপ্রধান দেশের ফল হলেও সিরাজগঞ্জে এর ফলন ভালো হচ্ছে। অন্যান্য ফল-ফসলের তুলনায় স্ট্রবেরি চাষে অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ায় এ ফল আবাদের প্রতি ঝুঁকছেন স্থানীয় চাষিরা।

jagonews24

স্ট্রবেরি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে অনেক কৃষক এখন স্বচ্ছল। এখানকার উৎপাদিত স্ট্রবেরি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

স্ট্রবেরি দেখতে আসা দর্শনার্থী আরিফ, শামীম, ফিরোজসহ অনেকে বলেন, রহমতগঞ্জে সুন্দর একটি স্ট্রবেরি বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছি। এছাড়াও স্ট্রবেরি চাষে সফলতার কথা শুনে আশপাশের নতুন উদ্যোক্তারা ও আসছেন।

jagonews24

স্ট্রবেরি কিনতে আসা শহরের পাইকার লাল মিয়া বলেন, আগে অন্য জেলা থেকে স্ট্রবেরি আমদানি করতাম। পরিবহন খরচ দিয়ে দাম বেশি হত। এখন নিজ এলাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে। ফলের কোয়ালিটি অনেক ভালো। দাম অনেক কম।

পল্লিকানন নার্সারির কর্মচারী আলী হোসেন বলেন, প্রায় ৪ বছর হলো এই নার্সারিতে কাজ করছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের চারা বিক্রি হয়। তবে স্ট্রবেরি চাষ করার পর থেকে আমাদের পরিশ্রম দ্বিগুণ বেড়েছে। চুরির ভয়ে রাত জেগে পাহারা দিতে হয়।

এই ফলগুলো দেখতে এতোই সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু লাগে তখন পরিশ্রমের কথা মনেই থাকে না। তবে এবছর আমরা সফল হয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় আমরা স্ট্রবেরি চাষে কোনো প্রকার রাসায়নিক সার ব্যবহার করিনি।

jagonews24

পল্লিকানন নার্সারির মালিক মো. রেজাউল ইসলাম ইমরান বলেন, রহমতগঞ্জ এলাকায় একটা নার্সারি রয়েছে। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ফলদ, বনজ ও ঔষধী চারা বিক্রি করে আসছি। গত দুই বছর হলো স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। গতবার ২ বিঘা জমিতে চাষ করলেও এবার ৫ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি আবাদ করেছি।

৫ বিঘায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ১৫ লাখ টাকা স্ট্রবেরি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই মৌসুমে ৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। তবে প্রথম পর্যায়ে প্রতি কেজি স্ট্রবেরি পাইকারি বিক্রি হয়েছে এক হাজার থেকে এগারো শত টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ফল কমে যাওয়ায় প্রতিদিন ২৫-৩০ কেজি স্ট্রবেরি বাজারজাত করা হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ক্ষেত থেকেই পাইকাররা নিয়ে যায়।

jagonews24

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার আবু হানিফ জানান, সদর উপজেলার রহমতগঞ্জে পল্লিকানন নার্সারিতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি-বিদেশি ফলের চারা বিক্রির পাশাপাশি বেড পদ্ধতিতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জেলায় এর আগে কোনো নার্সারি বা কৃষি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হয়নি। গত ৩ থেকে ৪ বছর হলো স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। এবছর জেলায় ৯ থেকে ১০ জায়গায় কৃষি জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়েছে। স্ট্রবেরিতে লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। আগামীতে আরো বেশি স্ট্রবেরি চাষ হবে বলে তিনি আশা করছেন।

এমএমএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।