দেড় লাখ টাকার বরই বিক্রির আশা আওলাদের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২২

অডিও শুনুন

ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে বরই। পরিপক্ব বরইগুলো দেখতে লাল আপেলের মতো। স্বাদেও মিষ্টি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এগুলো কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী, থাই, সিডলেস ও টক-মিষ্টি হিসেবে পরিচিত। এ বাগানটি শরীয়তপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের স্বর্ণঘোষ গ্রামে অবস্থিত। আওলাদ হোসেন ফকির এ বরই বাগানটি করেছেন।

বরই চাষে স্বাবলম্বীও হয়েছেন আওলাদ। প্রতিবছরই লোকজন তার বাগানে এসে বরই কিনে নিয়ে যান। তিনি আশা করছেন এবছরও লোকজন আসবেন বরই কিনতে। ফলন ভালো হয়েছে। নতুন জাতের এ বরই চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন তিনি। এতে আওলাদ বেশ খুশি। তিনি বছর বছর বেশি পরিমাণ জমিতে এই বরইয়ের চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, প্রথমে কাশ্মীরি আপেল কুল শরীয়তপুর পৌরসভার স্বর্ণঘোষ গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন ফকির ২০১৮ সালে চুয়াডাঙ্গার একটি নার্সারি থেকে এ জাতের বরইয়ের চারা শরীয়তপুরে আনেন।

ওই বছরের মার্চ মাসে তিনি ৩০ শতাংশ জমিতে ১৫০টি কাশ্মীরি আপেল কুলের চারা রোপণ করেন। রোপণের ১০ মাসের মাথায় চারাগুলো পরিপক্ক হয় এবং গাছে ফুল আসে। এ ছাড়া এ বছর বল সুন্দরী, থাই, সিডলেস ও টক-মিষ্টি কুল চাষ করেছেন তিনি। বাম্পার ফলনও হয়েছে। তার দেখা দেখি অনেক কৃষক বরই চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

সরেজমিনে সোমবার (১০ জানুয়ারি) বরই বাগানে দেখা গেছে, তিনটি বাগানের ৯০ শতক জমিতে রোদের মধ্যে চিকচিক করছে বরই। কিছু কিছু ডাল ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। প্রতি গাছে প্রায় ৫০-৬০ কেজি করে বরই ধরেছে।

আওলাদ বলেন, ইউটিউবে কৃষি বিষয়ক প্রতিবেদন দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নেই বরই চাষের। সিঁদুর রঙের বরইগুলো খুব সুস্বাদু। প্রথমে একটি বাগান গড়ে তুলতে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তখন ১ লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। এ বছর তিনটি বাগানে ৯০ শতক জমিতে বরই চাষ করতে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ১৫ থেকে ২০ দিন পরই বাগান থেকে বিক্রি শুরু হবে বরই। আসা করি এবার দেড় লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।

দেড় লাখ টাকার বরই বিক্রির আশা আওলাদের

তিনি বলেন, শরীয়তপুরের মাটিতে কাশ্মীরি আপেল কুল, বল সুন্দরী, থাই, সিডলেস ও টক-মিষ্টি কুলের বাম্পার ফলন হয়। যেমনটি হয়েছে আমার। এখানকার মাটি অনেক ভালো। যে কেউ সহজে এটি চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। এ ছাড়া বিক্রির জন্য লক্ষাধিক চারা তৈরি করেছি আমি। এই চারাগুলো সরাসরি ছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে। এখানেও আয় হবে আমার।

স্বর্ণঘোষ গ্রামের ছালাম ফকির, মিজান সিকদার, শাহাদাৎ ফকির বলেন, বরই চাষ করে আওলাদ সফল হয়েছেন। আমরাও তার দেখাদেখি বরই বাগান করতে চাই।

শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (খামারবাড়ি) উপ-পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আওলাদ বরই চাষ করে বিগতবছরগুলোতে ভালো লাভবান হয়েছেন। এবারও তার গাছগুলোতে ভালো ফল আসছে। বরই চাষ করে তিনি স্বাবলম্বী হয়েছেন। আমরা তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো।

মো. ছগির হোসেন/এমএমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।