মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:৫৭ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২১

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে সরিষা ফুলের মধু বিক্রি করে মাসে সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় করছেন মৌচাষি মনিরুল। তিনি উপজেলার রহনপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১০ সাল থেকে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মৌ চাষ করে এখন লাখোপতি তিনি। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ পদ্ধতিতে মৌচাষ করলে ভালো আয় করা সম্ভব। এতে সরিষার ফলনও ভালো হয়।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের দায়েমপুর গ্ৰামে মনিরুলের খামারে গিয়ে দেখা যায়, ২৫০টি বাক্সে মৌচাষ করছেন তিনি। বাক্সের ভেতর থেকে ভোঁ ভোঁ শব্দ আসছে প্রশিক্ষিত মৌমাছির। বাক্সগুলোর ওপরের অংশটা মোড়ানো কালো রঙের পলিথিন ও চট দিয়ে ঢাকা।

মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

মৌচাষি মনিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, আমি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে মৌচাষ করে আসছি। গোমস্তাপুর ও নাচোলসহ জেলায় ৫ উপজেলায় আমার মৌচাষের খামার আছে। গত নভেম্বর মাসে আমি ২৫০টি বাক্সে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার মধু বিক্রি করেছি। বাজারে ১২ হাজার টাকা মণ এ মধু বিক্রি করি। আর খুচরা বিক্রি করা হয় ৪০০-৫০০ টাকা কেজি দরে।

মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

তিনি আরও বলেন, এভাবে মধু চাষ করতে কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। আমার ২৫০টি বাক্সে এখন মেলেফিরিয়া জাতের মৌমাছি রয়েছে। এটি তিন ধরনের হয়ে থাকে। পুরুষ, স্ত্রী ও শ্রমিক মৌমাছি। শ্রমিক মৌমাছি সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে নিয়ে আসে। আর স্ত্রী ও পুরুষ মৌমাছির কাজ হচ্ছে শুধু বংশ বৃদ্ধি করা। একটি বাক্সে ৩০ থেকে ৪০ হাজার মৌমাছি আছে।

মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

বাক্সের ভেতরে কাঠের তৈরি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো। সেগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। আমি সরিষা ফুলের মধু ছাড়াও আমি কালোজিরা, লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করি। এছাড়াও যদি কোনো বাক্সের মৌচাছি মারা যায় সেগুলো শুকিয়ে বিক্রি করি ৩ হাজার টাকা কেজি দরে।

মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

মৌচাষি মনিরুল ইসলামের মৌচাষ খামারের শফিকুল নামে এক শ্রমিক জানান, মনিরুল ভাইয়ের সাথে চলাফেরা করে আমি মৌচাষ করার অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। মনিরুল ভাই অনেক পরিশ্রমী। তিনি অনেক কষ্টে করে তিল তিল করে এই প্রকল্প তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা ১০ জন এ খামারে কাজ করি। আমাদেরকে মাসে ১২ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হয়। এ থেকেই চলে আমার সংসার।

মৌচাষে লাখোপতি মনিরুল

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার ৫টি উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল ১৭ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। আর আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ২১০ হেক্টরে। তবে আপনি যে মৌচাষি মনিরুলের কথা বলছেন, এভাবে মৌ চাষ করলে সরিষার ফলন আরও ভালো হয়। আর এই মৌচাষ একটি ব্যাপক লাভজনক ব্যবসা।

সোহান মাহমুদ/এমএমএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।