যে কারণে শার্শায় শুরু হয়েছে ব্রি-৮৭ ধানের বাণিজ্যিক চাষ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি যশোর
প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

যশোরের শার্শা উপজেলায় আমন মৌসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত ঝড় ও বৃষ্টিতে সহনশীল ব্রি-৮৭ নতুন জাতের ধানের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে। এলাকার কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

উপজেলায় গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে ২৭ বিঘা জমিতে এই ধানের চাষ হয় তবে এবার প্রায় ৩ হাজার কৃষক ৮০০ হেক্টর (৭২০০বিঘা) জমিতে ব্রি-৮৭ জাতের ধানের চাষ করেছেন। আগামী আমন মৌসুমে এই সংখ্যা অন্তত তিনগুণ বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

নতুন এই জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করতে গত বছর শার্শা উপজেলার ১৫ জন কৃষককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রদর্শনী প্লটের মাধ্যমে তাদেরকে কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ায় তারা লাভবান হওয়ায় এবার চাষির সংখ্যা বেড়েছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, যশোরের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত শার্শা উপজেলায় গত কয়েক বছরের ব্যবধানে স্বর্ণা, রত্না, চিকন মিনিকেট ও সুগন্ধি চিকন, ব্রি-৫০, ব্রি-বিনা ৬৩, বাংলামতি জাতের ধান চাষ বেড়েছে। তবে ব্রি-৮৭ চাষে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।

কৃষিবিদরা বলছেন, তাদের উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল এই ধান চাষে ফলন পেতে সময় লাগে ১২৭ দিন। অন্য ধানে লাগে অন্তত ১৫০ দিন। বৃষ্টি ও ঝড় সহনশীল এই জাতের ধানের ফলন প্রতি একরে ১০৫ মন।

আমলাই গ্রামের একজন ধান চাষি সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমন মৌসুমে সব সসয় ঝড় বৃষ্টি হয়। অন্য ধানের ফলন শেষ মুহূর্তের ঝড় বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যায়। আর ব্রি-৮৭ জাতের ধান গাছের গোড়া শক্ত হওয়ায় সাধারণ ঝড় বৃষ্টিতে গাছ হেলে পড়ে না। এতে ফলনে মার খাওয়ার কোন দুশ্চিন্তা থাকে না।

শার্শার চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, ধানের চাহিদা, ফলন ও দাম তিনটেই একসাথে পাওয়া যায় বলে ব্রি-৮৭ জাতের ধানের চাষ করেছি। এই ধানের চাষ করলে দু’ফসলি জমিতে বছরে তিন ফসলের চাষ করা যায় এটা আমাদের একটি বাড়তি পাওনা। গোগার খোরশেদ আলম বলেন, গত বছর একবিঘা জমিতে ব্রি-৮৭ জাতের ধানের চাষ করেছিলাম। এবার অন্যধান ছেড়ে পাঁচ বিঘায় চাষ করেছি।

এটা চাল চিকন হওয়াতে বাজারে চাহিদা আছে। ভালো দামও পাওয়া যায়। বীজের জন্য অনেকে করছে। আগামী বছর অনেকে এই ধান চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল বলেন, মোটা ধান প্রতি একরে ৬৫ থেকে ৭৬ মণ ফলন হলেও স্বর্ণা মিনিকেটসহ অন্যান্য চিকন ধানের ফলন হয় ৫৮ থেকে ৬৭ মণ। তারপরও দিনের পর দিন চিকন ধান ও চাউলের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি ভাল দাম পাওয়ায় চাষিরা ঝুঁকছেন চিকন ধান চাষে।

এবার ফলন বেশি হয় এমন একটি জাতের খোঁজ পাওয়ায় ব্রি-৮৭ চাষে এলাকার কৃষকের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। যেসব এলাকায় কৃষক আমন ধান কেটে একই জমিতে আগাম আলু বা শীতকালীন সবজি আবাদ করে অধিক লাভবান হতে চান সেসব এলাকার জন্য এ জাতটি বিশেষ উপযোগী।

মো. জামাল হোসেন/মিজান/এসইউ/এএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।