ক্যাপসিকাম চাষে লাভবান মামা-ভাগ্নে

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ঝিনাইদহের মহেশপুরের সীমান্তবর্তী কুসুমপুর মাঠপাড়ায় প্রথমবারের মতো ক্যাপসিকাম চাষ করে সফল হয়েছেন মামা সুলতান মাহমুদ ও ভাগ্নে আলমগীর কবির। ইতোমধ্যে বাগানের ফল বিক্রি করে লাভবান হয়েছেন তারা। সামনে আরও লাভের আশা তাদের।

জানা গেছে, শুরুতে বাংলাদেশি কিছু বীজ থেকে চারা তৈরির চেষ্টা করে সফলতা পাননি তারা। এরপর কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বীজ এনে বীজতলা করেন। সেখান থেকে ১৫শ’ চারা তিন একর জমিতে রোপণ করেন। দু-মাস পর থেকেই শুরু হয় ফল সংগ্রহ।

capsicum

সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে বীজ ছিটানোর পর নভেম্বর থেকেই জমি তৈরি করে মালচিং পেপার দিয়ে চারা রোপণ শুরু হয়।

ক্যাপসিকাম চাষি সুলতান মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, বিদেশি এই ফসলের জন্য তাপমাত্রা লাগে ১৫ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এখানে অনেক সময় কম-বেশি হয়েছে। তবুও আমাদের ফলনের কমতি হয়নি। এ বছর বাংলাদেশের কোথাও ক্যাপসিকামের ভালো ফলন হয়নি, কিন্তু আমাদের ফলন ভালো হয়েছে।

capsicum

তিনি জানান, এক একর জমিতে ১৫শ’ গাছ লাগিয়েছিলাম। তবে সেখান থেকে ৭শ’র মতো গাছ মারা যায় আর বাকিগুলো থেকে ফল সংগ্রহ চলছে। প্রতি গাছে ১২ থেকে ১৫টি ফল আছে। ৫-৬টি ফলে এক কেজি হচ্ছে। পাইকারি এই ফল ঢাকায় অর্ডারে পাঠাই ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দামে। বর্তমানে প্রতিদিন ৫-৭ শ’ কেজি ফল পাঠানো হচ্ছে ঢাকায়। ক্ষেত থেকে ক্যাপসিকাম আরও প্রায় ১২০ দিন সংগ্রহ করা যাবে। আবার অনেক গাছেই নতুন করে ফুল থেকে ফল আসছে।

অপর চাষি আলমগীর কবির বলেন, ইতোমধ্যে ৪ লাখ টাকার বিক্রি হয়েছে। আরও ৬ লক্ষাধিক টাকার বিক্রির আশা করছি । সাধারণত ক্ষেত থেকে তুলে ফলগুলো প্যাকেজিং করে ঢাকায় পাঠানো হয়। কৃষি কর্মকর্তারা সবসময়ই আমাদের ক্ষেতে আসছেন, খোঁজ-খবর নিয়ে নানা পরামর্শ দিচ্ছেন। ফলে আমরাও তাদের পরামর্শে কাজ করে ভালো ফলাফল পাচ্ছি।

capsicum

ক্যাপসিক্যাম ক্ষেতে আসা দর্শনার্থী আব্বাস আলী বলেন, নতুন একটি ফল চাষ হয়েছে শুনে এখানে এসেছি। এ ফল আগে আমরা কোনোদিন দেখিনি। বিদেশি এ ফল আমাদের মহেশপুরে চাষ হচ্ছে, দেখে খবই ভালো লাগছে।

উপজেলার স্বরূপপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল কবির জানান, ক্যাপসিকামের মূল শক্রু এফিডজ্যাসিড জাতীয় কিছু পোকা। এই পোকা দমনে এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে বিষমুক্ত ইয়োলো ও ব্লু ট্রাপ। এই পোকা না লাগলে ফলন অনেক ভালো হয়।

capsicum

মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান আলী জাগো নিউজকে জানান, মামা-ভাগ্নে ক্যাপসিকাম চাষে ঝিনাইদহের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। আমদানি ক্যাপসিকামের তুলনায় আমাদের উৎপাদিত ক্যাপসিকামের গুণগত মান অনেক ভালো। ফলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এটি বিদেশে রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামীতে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই চাষ বাড়াতে পরামর্শের পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার কৃষককে ক্ষেতে এনে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রথমে যখন চাষটি শুরু হয়েছিল তখন অনেক গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল স্থানীয়দের মধ্যে। কিন্তু সেই গুঞ্জনকে পেছনে ফেলে সফলতা এসেছে। তাই অবশ্যই আমরা বলতে পারি, এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া ক্যাপসিকাম চাষের জন্য উপযোগী।

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/জেডএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।