৪০০ বছরের প্রাচীন বটগাছ!

মীর আব্দুল আলীম
মীর আব্দুল আলীম মীর আব্দুল আলীম , সাংবাদিক
প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ৩০ মে ২০১৯

ইতিহাস-ঐতিহ্য খুঁজে নিশ্চিত হওয়া গেছে, কালীগঞ্জের মল্লিকপুরের এশিয়ার বৃহত্তম প্রাচীন বটগাছের পর হয়তো দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের হিরনালের বটগাছ। বটগাছটি বর্তমানে এক একর জমিজুড়ে বিদ্যমান। গাছটির বয়স কারো মতে ৪০০ বছর। আবার কারো মতে ৫০০ বছরের উপড়ে। কুলাদি মৌজায় অবস্থিত গাছটি ‘হিরনাল বাগবাড়ী বটগাছ’ নামে বিশেষভাবে পরিচিত।

স্থানীয়দের মতে, গাছটি ৪০০ বছরের পুরনো। রাস্তার ধারে ডাল-পাতায় পরিপূর্ণ গাছটি জনবিরল স্থানে পথিকের বিশ্রামের আশ্রয়স্থল। বটগাছটি একের পর এক ঝুরি নামিয়ে বিরাট আকার ধারণ করেছে। স্থানটির মালিক ছিলেন ৩৬০ আউলিয়ার একজন আল-হাদী (র.)। আল-হাদী ছিলেন মিরপুরের শাহ আলীর (র.) বড় ভাই।

জনশ্রুতি আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে আল-হাদী (র.) এলাকায় বসবাস করেছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর এটি খাস হয়ে যায়। আগে তিথি অনুযায়ী এখানে পাঠা বলি হতো। এ গাছের নিচে একটি স্থায়ী কালীপূজার আসন স্থাপিত হয়েছে। এখনও মানুষ এখানে মানত করে। তবে এখনো পর্যন্ত কারো নজরে আসেনি।

কথিত আছে, তৎকালীন জমিদার রামরতন ব্যানার্জি হাতির শূর দিয়ে বটগাছটি টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। বটগাছটির নিচে কথা হয় জসিম সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাপ-দাদাগো মুখে হুনতাম এই বটগাছের কথা।’ তার মতে, গাছটির বয়স ৫০০ বছরের উপড়ে।

bot-in

গাঁয়ের সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ (পঁচানব্বই বছর) নাসির ফকিরের মতে, গাছটির বয়স সাড়ে ৩০০ বছরের উপড়ে। তিনি বলেন, ‘আবার বাবা মজিবুর রহমান ওরফে ঠান্ডু ফকিরই বেঁচে গেছেন ১০০ বছর। আমার বাবায় কইতো দাদায়ও এই গাছটা এমন দেখছে।’

হিরনাল বাগবাড়ী এলাকার পঞ্চাশোর্ধ্ব রাবিয়া বেগম বলেন, ‘বাজান, আমরা ছোটবেলা থেইক্যা বটগাছটা দেইহ্যা আইতাছি। অনেক মানুষ এহানে আয়ে। মানত করে। একবার গাছটার মদ্যে আগুন লাগছিলো। অনেকখানি পুইড়াও যায়। পরে গ্রামের লোকজনে মিল্যা আগুন নিভায়।’

তবে বটগাছটির প্রতি নেই কোন সচেতন পরিচর্যা। অযত্ন, অবহেলা ও অত্যাচারে বিলীন হতে চলেছে গাছটি। এ ঐতিহ্যকে গুরুত্বসহকারে কাজে লাগালে এ অঞ্চল হতে পারে পর্যটনকেন্দ্র। বিস্তৃত এ বটগাছের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পাখির কলকাকলি মুখরিত শীতল পরিবেশ বিমুগ্ধ চিত্তকে বিস্ময় ও আনন্দে অভিভূত করে।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।