জেনে নিন ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৮ পিএম, ০৩ মার্চ ২০১৮
জেনে নিন ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

ঢেঁড়শ একটি জনপ্রিয় সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ও সি রয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত আয়োডিন, ভিটামিন এ এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে। ফলে ঢেঁড়শ চাষ করলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক উপকারিতাও রয়েছে। তাই আসুন জেনে নেই ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি-

ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

বীজ বোনার আগে প্রথমে ২৪ ঘন্টা ভিজানো উচিত। গভীরভাবে চাষ করতে হলে মাটিকে চাষের জমি তৈরি করতে হবে, যা চাষ ও মই দিয়ে ঝুরঝুরে করে তৈরি হয়। সারির দুরত্ব হবে ৩০ ইঞ্চি। বীজ সারিতে ১৮ ইঞ্চি দূরে দূরে ২-৩ টি বীজ বোনতে হবে, যা জাত অনুযায়ী পরিবর্তন করতে হবে। চারা থেকে চারা এবং সারি থেকে সারির দুরত্ব কমানো বা বাড়ানো যেতে পারে, যেমন, শীতকালে গাছ ছোট হয়ে যেতে পারে। গজানোর পর প্রতি গর্তে একটি করে সুস্থ সবল চারা রেখে বাকী চারা গর্ত থেকে উঠিয়ে ফেলতে হবে। বীজের পরিমান হলে: জাত ভেদে প্রতি ২০-২৫ কেজি প্রতি শতক।

 

মাটি 


দো-আশ ও বেলে দো-আশ মাটি ঢেঁড়শ চাষের জন্য ভালো। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকলে এটেল মাটিতেও চাষ করা যায়।

জাত


শাউনি, পারবনি কানি, বারি ঢেঁড়শ, পুশা সাওয়ানি, পেন্টা গ্রিন, কাবুলি ডোয়ার্ফ, জাপানি প্যাসিফিক গ্রিন চাষ উপযোগী জাত।

dherosh

ঢেঁড়স চাষের উপযুক্ত সময়


ঢেঁড়শ সারা বছর চাষ করা যায়। তবে গ্রীষ্মকাল চাষের উপযুক্ত সময়। ফাল্গুন-চৈত্র ও আশ্বিন-কার্তিক মাস বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।

ঢেঁড়স চাষে বীজ


প্রতি শতকে ২০ গ্রাম এবং প্রতি হেক্টরে ৪-৫ কেজি বীজ প্রয়োজন হয়।

বীজ বপণ পদ্ধতি


বীজ বপণের আগে ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হয়। গভীরভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হয়। মাটি থেকে সারির দূরত্ব হবে ৭৫ সেন্টিমিটার। বীজ সারিতে ৪৫ সেন্টিমিটার দূরে দূরে ২-৩টি করে বীজ বুনতে হয়। জাত অনুযায়ী চারা থেকে চারা এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ১৫ সেন্টিমিটার কমানো-বাড়ানো যায়। শীতকালে গাছ ছোট হয় বলে দূরত্ব কমানো যেতে পারে। চারা গজানোর পর প্রতি গর্তে একটি করে সুস্থ চারা রেখে বাকি চারা গর্ত থেকে উঠিয়ে ফেলতে হয়।

dherosh

সার ব্যবস্থাপনাঃ


প্রতি শতকে গোবর ৭৫ কেজি, সরিষার খৈল ১.৭৫ কেজি, ইউরিয়া ২৩০ গ্রাম, টিএসপি ৩৫০ গ্রাম, এমওপি ২৩০ গ্রাম।

 

সারের নাম

শতক প্রতি সার

কম্পোস্ট

৭৫ কেজি

ইউরিয়া

২৩০ গ্রাম

টিএসপি

৩৫০ গ্রাম

পটাশ

২৩০ গ্রাম

সার প্রয়োগ 


জমি তৈরির সময় ইউরিয়া সার বাদে বাকি সব সার মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মেশানোর ১০-১৫ দিন পর জমিতে ঢেঁড়শ বীজ বপণ করতে হয়। ইউরিয়া সার সমান দু’ কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম কিস্তিতে চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর এবং ২য় কিস্তিতে দিতে হবে চারা গজানোর ৪০-৫০ দিন পর।

ঢেঁড়স চাষ ও পরিচর্যা


মাটির উপরিভাগ মাঝে মাঝে আলগা করে দিতে হবে। জমি সবসময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। মাটির প্রকারভেদ অনুযায়ী ১০-১২ দিন পরপর সেচ দিতে হবে। প্রতি কিস্তিতে সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হবে।

পোকামাকড়


ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। এছাড়া জাব পোকা, সাদা মাছি, ছাতরা পোকা, লাল গান্ধি ইত্যাদিও ক্ষতি করে।

dherosh

রোগবালাই


হলদে শিরা স্বচ্ছতা ঢেঁড়শের প্রধান ক্ষতিকর রোগ। এছাড়া মোজেইক ও পাতায় দাগ রোগও দেখা যায়।

সংগ্রহ


বীজ বপণের ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে এবং ফুল ফোটার ৩-৫ দিনের মধ্যে ফল আসা শুরু হয়। জাতভেদে ফল ৮-১০ সেন্টিমিটার লম্বা হলেই সংগ্রহ করতে হয়।

উপকারিতা


ঢেঁড়শ নিয়মিত খেলে গলাফোলা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এটি মানুষের হজমশক্তি বাড়াতেও সহায়তা করে থাকে।

এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।