ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ- শেষ পর্ব

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:১২ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

জালের খাঁচায় মাছ চাষ একদিন জনপ্রিয় হবে। হবে হাজারও মানুষের কর্মসংস্থান। বাড়বে আমিষের উৎপাদন। শক্ত হবে জাতীয় অর্থনীতি। তাই আসুন জেনে নেই ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষের উপায়। আজ শেষ পর্ব-

যে মাছ চাষ করবেন
খাঁচায় সব ধরনের মাছ চাষ করা যায় না। সেক্ষেত্রে বিদেশি ঘাওর, নাইলোটিকা, রাজপুঁটি, কার্প প্রজাতি ও পাঙ্গাস। এসব মাছের গড় উৎপাদন ৪-৫ মাসে প্রতি ঘনমিটার ৫-১৫ কেজি।

পোনার মাপ
পোনা সবসময়ই বড় সাইজের ছাড়া ভালো। তবে ২-৩ ইঞ্চির কম হলে চলবে না।

পোনার পরিমাণ
এর কোনো সুনিদির্ষ্ট নিয়ম নেই। ধরুন আপনি উৎপাদন করবেন প্রতি ঘনমিটারে ১০ কেজি। সেখানে পোনা ছাড়বেন প্রতি ঘনমিটারে ১০০টা + ৫% ধরে নেবেন মারা যাবে। তেমনি আফ্রিকান মাগুর ছাড়তে চাইলে লক্ষ্যমাত্রা প্রতি ঘনমিটারে ১৫ কেজি এবং প্রতিটা মাছের গড় ওজন ২৫০ গ্রাম। তবে সেখানে পোনা ছাড়তে হবে ৬০টা + ৫% মারা যাবে।

মাছের খাদ্য
অনেক খাল-বিলে কোনো মৌসুমে প্রচুর উদ্ভিদ কণার জন্ম হয় যে, অল্প ঘনত্বে মাছ ছেড়ে খাদ্য ছাড়াই প্রতি ঘনমিটারে ৪-৫ মাসে ৫-৭ কেজি মাছ উৎপাদন করা যায়। তবে সুষম খাদ্য হিসেবে দৈনিক ২-৩ বার খাবার দিতে হয়। এখানে প্রাণিজ আমিষ, যেমন- শুঁটকি মাছ, শামুকের মাংস, গরু-ছাগলের রক্ত, মাংসের ছাটি বা গরু-ছাগলের নাড়ি-ভুঁড়ি ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত খৈল। যেকোনো খৈল, যেমন- সরিষা, তিল, নারকেল, বাদাম, সয়াবিন, তিসি, তুলা ইত্যাদি। উচ্ছিষ্ট ভাত। এছাড়া প্রচুর ঘাস খায় নাইলোটিকা, গ্রাস কার্প ও রাজপুঁটি। ঘাসের মধ্যে নরম ঘাস, যেমন- রাইদা, ইছাদল, পোটকা প্রভৃতি। সুষম খাদ্যের জন্য শুঁটকি অথবা যেকোনা প্রাণিজ আমিষ ১০-৩০%, খৈল ২০-৪০%, গমের ভুষি বা মিহি কুঁড়া ২০-৫০%, তার সাথে ৫% চিটাগুড় ও ৫-১০% সস্তা দামের আটা ও ০.৫% ভিটামিন। খাবার তৈরির সময় একটু পানি মেশাবেন যেন খাবারটা মাখতে মাখতে সাবানের মতো শক্ত হয়। মনে রাখতে হবে, তৈরি বল ১৫-২০% মিটার পর্যন্ত পানিতে যেন না গলে। খাদ্য বাঁশের ঝুড়িতে করে খাঁচার মধ্যে পানির ১ হাত নিচে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। মাছ ৫-১০ মিনিটের মধ্যে সব খাদ্য শেষ করে ফেলবে।

খাদ্যের পরিমাণ
সুষম খাদ্য দিয়ে ১ কেজি মাছ উৎপাদন করতে ২-৩ কেজি খাদ্য দরকার হয়। খাবারের সাথে সাথে কাঁচা গোবর, মুরগির বিষ্ঠা ও প্রচুর ঘাস দিলে খরচ অনেক কমে।

খাঁচা তৈরির খরচ
২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি খাঁচা তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ১৬ হাজার টাকা, যা চার-পাঁচ বছর স্থায়ী হয়।

উৎপাদন
মাছের আকার ৩০০-৪০০ গ্রাম হলেই বিক্রির উপযোগী হয়, আর এ ক্ষেত্রে সময় লাগে মাত্র ছয় মাস। প্রতি ঘনমিটারে কমপক্ষে ৩০ কেজি মাছ উৎপাদিত হয়ে থাকে। সাধারণত চাষকৃত পোনার ওজন ১০ গ্রাম হয়ে থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে আকারে বড় অর্থাৎ ২০-৩০ গ্রাম ওজনের পোনা চাষ করলে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়া যায়। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি ১০টি খাঁচা থেকে প্রতি ছয় মাসে কমপক্ষে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।