মিরসরাইয়ে মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী আবুল কাশেম

এম মাঈন উদ্দিন
এম মাঈন উদ্দিন এম মাঈন উদ্দিন , উপজেলা প্রতিনিধি, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, ০৮ মার্চ ২০২৫

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার প্রথম মাশরুম চাষি আবুল কাশেম। ভিডিও দেখে মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ জনপদে নতুন কেউ মাশরুম চাষে উদ্ধুদ্ধ হলে তার থেকেই পরামর্শ ও সহযোগিতা নেন। তিনি হাতেকলমে প্রাথমিক প্রশিক্ষণও দেন। ষাটোর্ধ্ব আবুল কাশেম মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের বাসিন্দা।

৩ দশক প্রবাস জীবন পার করে দেশে ফেরেন আবুল কাশেম। দেশে ফেরার পর তিনি জীবিকা নির্বাহের কোনো উপায়ন্তর খুঁজে পাচ্ছিলেন না। কখনো নার্সারি, কখনো দোকান করে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টায় কাটিয়ে দেন ৯ বছর। জীবিকা নির্বাহের সেই প্রচেষ্টাগুলোতেও ব্যর্থ হন তিনি। হতাশায় ভুগতে ভুগতে একসময় মাশরুম চাষের ভিডিও দেখে ২০২২ সালে ঝুঁকে পড়েন মাশরুম চাষে।

বিজ্ঞাপন

এবার তিনি সফলতা দেখতে চান, চান প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ভালোভাবে মাশরুম চাষ শুরু করতে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রশিক্ষণ নেন রিফা মাশরুম প্রজেক্ট আয়োজিত মাশরুম চাষ বিষয়ক ১ দিনের প্রশিক্ষণ। পরে বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘ইমপর্টেন্স অব মাশরুম অ্যান্ড কাল্টিভেশন টেকনিক’র ওপর ১০ দিনের প্রশিক্ষণ নেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়েই মাশরুম চাষ শুরু করেন আবুল কাশেম।

মিরসরাইয়ে মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী আবুল কাশেম

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মিরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় বর্তমানে তার ৪৪ ফুট বাই ২৪ ফুট আয়তনের মাশরুম প্রজেক্ট আছে, যা প্রায় ৬ লাখ টাকার সম্পদে উন্নীত হয়েছে। তার প্রজেক্টে এখন ১ হাজার স্পূণ আছে। প্রতিদিন ৫-৭ কেজি মাশরুম উৎপাদন হয় তার মাশরুম প্রজেক্টে। কেজি ৩শ টাকায় বিক্রি করেন। প্রচুর ক্রেতা চাহিদা থাকলেও উৎপাদন কম হওয়ায় সরবরাহ করতে পারছেন না। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে ১০-১৫ হাজার টাকা এবং বছরে প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় করেন। প্রাথমিক অবস্থায় খুব বেশি লাভ না হলেও ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় খুশি আবুল কাশেম।

আরও পড়ুন

মাশরুম চাষি আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি ৩০ বছর দুবাই ছিলাম। দেশে ফিরে কী করবো ভাবতে ভাবতে ইউটিউবে মাশরুম চাষের ভিডিও দেখে উদ্ধুদ্ধ হলাম। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও মিরসরাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় মাশরুম চাষের ওপর ট্রেনিং নিই। ট্রেনিং নেওয়ার পর মাশরুম চাষ খুবই সহজ হয়ে যায়। বর্তমানে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করছি। আয়ের এই অঙ্কটা অর্ধলক্ষ হবে দ্রুতই। আমি সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। নতুন কেউ উদ্ধুদ্ধ হলে তাদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে সহযোগিতা করি।’

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

মিরসরাইয়ে মাশরুম চাষে স্বাবলম্বী আবুল কাশেম

মাশরুম চাষ খুবই সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। প্রকল্পের আওতায় উদ্যোক্তা আবুল কাশেমকে আমরা মাশরুম উৎপাদন ঘর, চাষ ঘর, আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি, ভ্যান দিয়েছি। তিনি হাঁটি হাঁটি পা পা করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘মাশরুম একটি পুষ্টিকর খাদ্য। শরীরের নানা রোগের প্রতিকার হিসেবে কাজ করে। কম পুঁজিতে ভালো মুনাফা অর্জনের জন্য মাশরুম চাষের বিকল্প নেই। যদি কোনো উদ্যোক্তা মাশরুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে চান তাহলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।