সাফল্য নেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে : অসন্তুষ্ট দাতারা


প্রকাশিত: ০৫:৪৬ এএম, ২১ জুলাই ২০১৫

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রতি বছর ১৭শ’ কোটি টাকা ব্যয় করলেও কাঙ্ক্ষিত কোনো সাফল্য নেই পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের। অধিদফতরের কার্যক্রমে সরকার, বিশ্বব্যাংক ও ইউএনএফপিএসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা কেউ সন্তুষ্ট নয়। কারণ ২০১৫ সালেও ২০১১ সালের জরিপের সীমানায় স্থির হয়ে আছে।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম যেমন ছিল তেমনই আছে। কর্মীরা ঘুরছে বা কাজ করছে কাদের পাশে? তারা কি আছে না নেই। এই কথার জবাব নেই। আমরা যদি কাজ না করি বা কাজ যে করেছি তার প্রমাণ দেখাতে না পারি তাহলে অধিদফতরের প্রয়োজনটা কী?

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. নূর হোসেন তালুকদারের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে লেখা এক নির্দেশনামূলক চিঠিতে অধিদফতরের কার্যক্রম সম্পর্কে এ খেদোক্তি প্রকাশ পেয়েছে।

গত ১৪ মে চার পৃষ্ঠার নির্দেশনামূলক ওই চিঠিতে মহাপরিচালক নানা উপমা ও উদাহারণ টেনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সকল শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মনোজগতকে নাড়া দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তার এ চিঠিতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের কার্যক্রম সম্পর্কে খোলামেলা কথাবার্তার কারণে বড় বড় কর্মকর্তার পাশাপাশি কর্মচারীরা বিব্রত হয়েছেন। স্বাস্থ্য সেক্টরে তার লেখা এই চিঠি নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা চলছে।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, আমাদের স্বার্থ আমাদের চিন্তা করতে হবে। সরকারের স্বার্থ মানে জনগণের স্বার্থ। আপনি আগে গ্রামে বসবাস করতেন। এখন কমপক্ষে উপজেলা শহরে বাস করছেন। আপনার উন্নতি হয়েছে কিন্তু গরিব মানুষের আর্থিক ও শারীরিক উন্নতি হয়নি।

তাহলে কী দাঁড়ালো? আমরা সাচ্ছা দিলে আচ্ছা কাজ না করে বেতন নিচ্ছি কিন্তু দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে নানান অজুহাত দেখিয়ে যাচ্ছি। কাজটা কি ঠিক হচ্ছে? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন।

তিনি বলেন, প্রশ্নের জবাবে বিবেক যদি বলে ফাঁকি দিচ্ছি তবে আজ থেকেই শপথ করতে হবে- হো ফাঁকি নো হাংকি মাংকি। সঠিক ও সময়মতো কাজ করা হবে এবাদত। পরিবার পরিকল্পনার সাফল্যমণ্ডিত ইতিহাস রয়েছে। আপনার আগের জন কত সুন্দরভাবেই না কাজ করে গেছেন। আমরা কি ওই গর্বিত ইতিহাসের অংশীদার নই?

আমরা কি অলস, ফাঁকিবাজ না-কি উদাসীন? যদি তাই হয় তবে আপনার স্বামী, আপনার স্ত্রী, ছেলেমেয়ে ও আত্মীয়স্বজন আপনাকে ফাঁকি দেবে। এই দুনিয়াতেই সব কিছুর হিসেব হবে।

তিনি আরো বলেন, রোজা রেখে জলে ডুব দিয়ে জল খেলেও হিসেব দিতে হবে। ডানহাত, বামহাত আর অজুহাত হবে বজ্রপাত। আপনার প্রজন্ম পাবে না ভাত। জীবনে পোহাইবে না রাত। তাই ফাঁকি দেয়ার আগে ভাবুন কাকে ফাঁকি দিচ্ছেন, অন্যকে নয় সরকারকে নয় নিজেকেই ফাঁকি দিচ্ছেন।

নির্দেশনামূলক চিঠির শেষ দিকে তিনি লিখেছেন, বারো কোটি মানুষের তের কোটি মত, সকলেই দাবি করে আমি বেশি সৎ, আছে যত খারাপি আর যত অন্যায়-কে করে? কিছু করে বাতাসে কিছু করে বন্যায়।

তিনি লিখেছেন, মনোযোগ দিয়ে পড়ে যদি আপনার মনে একটু ধাক্কা লাগে একটু যদি মনোজগতের পাথর নড়াচড়া করে তবেই আমি স্বার্থক নতুবা ব্যর্থ।  

এমইউ/এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।