শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার দাবি ২২ গ্রামবাসীর
নির্মম নির্যাতনে নিহত শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনের গ্রামের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে ২২ গ্রামবাসীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে নির্যাতনকারী ঘাতকদের ১২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন স্থানীয় ২২ গ্রামবাসী। রোববার রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে স্থানীয় এলাকাবাসী এ আল্টিমেটাম দেন।
সিলেট নগরের কুমারগাঁও বাস স্টেশনের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামে নিহত সামিউলের বাড়ির উঠানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শিশু রাজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে ওই এলাকার ২২ গ্রামের মুরব্বি ও যুবকরা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাদেআলী, অনন্তপুর, পাইকারগাঁও, ইনাথাবাদ, খানুয়া, হাজিরাই, হকলামপুর, তাজপুর, দিঘীরপার, বসন্তগাঁও, গোস্তরগাঁও, পূর্বদর্শা, পশ্চিমদশা, মেদিনিমহল, সুজাতপুর, বাছিরপুর, মীরগাঁও, মইয়ারচর, কুমারগাঁও, নোয়াকুররমখলা, সোনাতলা ও বাওনপুর গ্রামের মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।
পশ্চিমদশা গাঁওয়ের মুরব্বি আশফাক আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বাদেআলী গ্রামের লিয়াকত আলী মাসুক, সমসের আলী, আকরম আলী মাসুক, ফারুক মিয়া, মো. আলী দুদু মিয়া, আবদুল মালিক, অনন্তপুর গ্রামের আবদুজ জাহির মেম্বর, জসিম মিয়া, আবদুল মছব্বির, পূর্বদশা গাঁওয়ের আবদুল মনাফ, বাছিরপুর গ্রামের আবদুল মতিন, মীরগাঁওয়ের তেরা মিয়া মেম্বর, বসন্তরগাঁওয়ের শামসুল হক, মেদিনিমহল গ্রামের আবদুল হাসিম, দিঘীরপার গ্রামের শাবাজ আলী, পাইকারগাঁও গ্রামের আবদুল কাদির, সাজিদ মিয়া, ইনাথাবাদ গ্রামের আলতা মিয়া, তাজপুর গ্রামের সায়েদ আহমদ প্রমুখ।
বৈঠকে সোমবারের মধ্যে শিশু রাজন হত্যায় জড়িত সকল আসামিকে গ্রেফতারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়।
এদিকে ২২ গ্রামবাসীর বৈঠকের খবর পেয়ে মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বাদেআলী গ্রামে উপস্থিত হন। তিনি রাজনের খুনিদের গ্রেফতারে সকলের সহযোগিতা চান। এসময় এলাকাবাসী পুলিশকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জালালাবাদ থানা পুলিশের ওসি আখতার হোসেন বাদেআলী গ্রামে ২২ গ্রামবাসীর বৈঠক হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন গ্রামবাসী। আশা করছি খুব শীঘ্রই পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করা হবে।
প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাঁও বাসস্টেশন এলাকার একটি ওয়ার্কশপে শিশু রাজনকে চোর বলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। লোমহর্ষক এ নির্যাতনে রাজন মারা যায়। পরে তার মরদেহ গুম করার চেষ্টাকালে পুলিশের হাতে আটক হন মুহিত আলম।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আটক মুহিত আলম (২৫) ও তার ভাই কামরুল ইসলাম (২৮), তাদের সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী (৩৪) ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়নাকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে।
ছামির মাহমুদ/এমজেড/পিআর