রাতে ফাইনালে মাঠে নামছে আর্জেন্টিনা-চিলি
পেলে পারেননি। ম্যারাডোনা পারেননি। জিকো পারেননি। কেমপেস পারেননি। গ্যারিঞ্চাও পারেননি। ফুটবল ইতিহাসে লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় নামের মালিক তাঁরা। যাদের ক্যাবিনেটে অনেক বড় বড় ট্রফি থাকলেও নেই কোপা আমেরিকা। গত দু’বার চেষ্টা করেও কোপা ক্যাবিনেটে নাম তুলতে পারেননি লিওনেল মেসিও। শনিবার তাই অন্যরকম এক লক্ষ্য নিয়েই কোপার ফাইনালে মাঠে নামবে মেসির আর্জেন্টিনা। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ২ টায়।
এক দিকে মেসি-আগুয়েরোর সাথে ডি মারিয়া-তেভেজ-রোমেরোরা থাকছেন, অন্যদিকে সানচেজ-ভিদালের পাশে তেমনি ভার্গাস-মেডেল-ব্রাভোরা। তবে দুই দলের একটা মিলও আছে, আর্জেন্টিনার এই প্রজন্মটির মত চিলির প্রজন্মটিও দেশের হয়ে কিছু জিততে পারেননি। সান্তিয়াগোর ন্যাসিওনাল স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে কোপা আমেরিকার ফাইনালে তাই অন্যরকম এক আবহই থাকবে। একটি ট্রফি হয়তো বদলে দেবে দেশ দুটির ফুটবলীয় গতিপথ। পাইয়ে দেবে অন্যরকম ভুলতে বসা এক স্বাদের বিচ্ছুরণ।
আর্জেন্টিনা সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন, দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ বারের টাইটেলধারী তারা। চিলি সেখানে প্রথম শিরোপার সন্ধানে। কিন্তু আর্জেন্টিনার সর্বশেষ কোপা ছিল ২২ বছর আগে। দুই দলের কেউই তাই জানেনা ট্রফি উঁচিয়ে ধরার স্বাদটা কেমন। মেসিরা অবশ্য গত বিশ্বকাপে খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন। কিন্তু জার্মানিতে স্বপ্ন বঙ্গ হয়েছে তাদের।
চিলির আবার অন্য দুঃখও আছে। কোপা আমেরিকার ৯৯ বছরের ইতিহাসে ৪বার ফাইনাল খেলে শিরোপা ছুঁতে পারেনি তারা। কিন্তু স্বাগতিক হয়ে এবার বেশ নৈপুণ্যই দেখিয়ে চলছে দলটি। টুর্নামেন্টে অপরাজিত দলটি সর্বোচ্চ ১৩টি গোল করেছে ফাইনালে আসার পথে। আরেক অপরাজিত আর্জেন্টিনার সেখানে ১০টি, যার ৬টিই আবার সেমিফাইনালে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে।
তবে ফাইনালের আগে লড়াইটা সমান্তরালে দাঁড় করানোর চেষ্টা চললেও দু’দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাস আর্জেন্টিনার পক্ষেই। যেটা চিলির জন্য মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। মোট ৮০ ম্যাচে আর্জেন্টিনার ৫৩ জয়ের পিঠে চিলির মাত্র ৬টি। অন্য ২১টি অমীমাংসিত। কোপার মঞ্চে সেটি আরো বিবর্ণ। ২৪ ম্যাচে আর্জেন্টিনার ১৮ জয়ের বিপরীতে জয়হীন চিলি ড্র করেছে ৬টিতে।
মেসিদের পক্ষে কথা বলছে আরো অনেক পরিসংখ্যানই। ১৯১৬ সালে লাতিন আমেরিকার সেরা এ টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার কাছে ৬-১ হারার ইতিহাস আছে চিলির। আগের ৬বারের কোপা আয়োজক চিলি থেকে ৪বার শিরোপা নিয়ে ফিরেছে আর্জেন্টাইনরা। তার মধ্যে আছে ১৯৫৫ সালের কোপার ফাইনালে চিলির বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের স্মৃতিও। ১৯৭৩ সালের পর আর্জেন্টিনাকে একবারই হারিয়েছে চিলি, ২০০৮ সালের বিশ্বকাপের বাছাইয়ে ১-০ তে। চিলির বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ২০১২ সালে গোল করেছিলেন মেসি। ২-১ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। চলতি কোপায় মাত্র ১ গোল পাওয়া মেসি যেমন বলেই রেখেছেন, ফুটবল দেবতা ফাইনালের জন্যই হয়তো তার গোলটি তুলে রেখেছেন।
এখন দেখার বিষয় পেলে-ম্যারাডোনাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন কিনা মেসি?
এমআর/আরআইপি