মানবতাবিরোধী অপরাধ : ফোরকান মল্লিকের রায় বৃহস্পতিবার
একাত্তরে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতনসহ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক পটুয়াখালীর রাজাকার ফোরকান মল্লিকের বিরুদ্ধে রায় আগামী বৃহস্পতিবার ১৬ জুলাই ঘোষণা করা হবে।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন। তার আগে গত ১৪ জুন ফোরকান মল্লিকের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যুক্তিতর্ক শেষে যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষনার জন্য রাখা হয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত ১৯ মামলায় ২১ আসামির বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। এর মধ্যে ট্রাইব্যুনাল-১ এ ৯টি ও ট্রাইব্যুনাল-২-এ ১০টি মামলার রায় ঘোঘণা করা হয়েছে। ফোরকান মল্লিকের রায় হবে ট্রাইব্যুনালের ২০তম ও ট্রাইব্যুনাল-২ এ ১১তম রায়।
প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল জাগো নিউজকে বলেন, আসামি ফোরকানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৫টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশন বিচারকালে এসব অভিযোগের পক্ষে সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ পেশ করেছে। এ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন দাবি করে সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেন প্রসিকিউটর বাদল।
ফোরকান মল্লিকের বিরুদ্ধে গত বছর ১৮ ডিসেম্বর এ অভিযোগ গঠন করা হয়। ফোরকান মল্লিক হত্যা-গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্মান্তরকরণ ও দেশান্তরকরণের মতো ৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ৮ জনকে হত্যা ও গণহত্যা, ৪ জনকে ধর্ষণ, ৩ জনকে ধর্মান্তরকরণ, ১৩টি পরিবারকে দেশান্তরকরণ, ৬৪টি বসতঘর ও দোকানপাটে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ। ফোরকানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পক্ষে ১৪ জন সাক্ষ্য দেয়। অন্যদিকে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ১৭ মে পর্যন্ত ফোরকান মল্লিকের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন চারজন সাফাই সাক্ষী। তারা হলেন- ইসহাক আলী খান, মৃদুল চন্দ্র সেন মধু, গোবিন্দ কুন্ডু।
মামলায় ফোরকান মল্লিকের বিরুদ্ধে গতবছর ২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এ আসামির বিরুদ্ধে গত ১৭ নভেম্বর আনুষ্টানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করেছিল প্রসিকিউশন। গত ৩ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার ফোরকান মল্লিককে আটক রাখার আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। গত ২৫ জুন ফোরকান মল্লিককে বরিশাল বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা।
এছাড়াও গত ২৩ জুন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের তিন রাজাকার শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার, আব্দুল লতিফ ও খান আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে যে কোন দিন রায় (সিএভি) ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আজ এ আদেশ দেয়। তিন রাজাকার শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার, আব্দুল লতিফ ও খান আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলায় রায় হবে ট্রাইব্যুনালের ২১ তম ও ট্রাইব্যুনাল-১এর ১০ম রায়।
এফএইচ/এআরএস/এমএস