বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ৬শ কোটি টাকা দুর্নীতি তদন্তে কমিটি গঠন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের দু`দফায় ছয় বছরের মেয়াদে ৬০০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৮তম সিন্ডিকেট সভায় সর্বসন্মতিক্রমে এ কমিটি গঠিত হয়। প্রতিবেদন আগামী সিন্ডিকেট সভায় (দুই মাস পর পর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়) পেশ করবে তদন্ত কমিটি।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি অধ্যাপক ডা.মাহমুদ হাসানকে সভাপতি করে গঠিত এ তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, বিএসএমএমইউ’র ফ্যাকাল্টি অব সার্জারি অনুষদের ডিন প্রফেসর ডা.কনক কান্তি বড়ুয়া ও সাংসদ রোস্তম আলী ফরায়েজী।
বিএসএমএমইউ’র কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা.জুলফিকার রহমান খান শনিবার রাতে তদন্ত কমিটি গঠনের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, বিগত ভিসির আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুমানিক ৮০ থেকে ৮৫টি প্রকল্পে বিপুল টাকার আর্থিক লেনদেন হয়।
ওই লেনদেনে কোনো প্রকার আর্থিক অনিয়ম ও দূুর্নীতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে সিন্ডিকেট সদস্যদের সুপারিশক্রমে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
কমিটির সদস্যরা তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে আগামী সিন্ডিকেট সভায় (দুই মাস পর পর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়) প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে বলে তিনি জানান। তবে মোট কত টাকার আর্থিক লেনদেনের অনিয়ম খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা জানাতে তিনি অস্বীকৃতি জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ডা.কামরুল হাসান সম্প্রতি ভিসি পদে যোগদানের পর বিগত ছয় বছরের আর্থিক লেনদেনের হিসাব খতিয়ে দেখার সময় অনিয়ম খুঁজে পান।
গত বেশ কিছুদিন যাবতই এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক নেতা ও সাধারণ চিকিৎসকদের মধ্যে ব্যাপক কানাঘুষা চলছিল। আগের ভিসি প্রধানমন্ত্রীর খুব কাছের হওয়ায় অনেকে তদন্ত কমিটি গঠন না করার পক্ষে ছিলেন।
অনেকেই বলছিলেন, ভিসি সরাসরি কোনো আর্থিক দুর্নীতির সাথে জড়িত না থাকলেও তাকে অন্ধকারে রেখে অনেকেই দুর্নীতি করে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়ে গেছেন।
সূত্র জানায়, বিএসএমএমইউকে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করার জন্য একটি প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ছিল। সবচেয়ে বড় আর্থিক অনিয়ম ওই প্রকল্পেই হয়েছে।
এছাড়া ছোট বড় মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০টিরও বেশী গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রকল্প চলছিল। এসব খাতেও কমবেশী আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে। এসব অনিয়মের অভিযোগ সঠিক কিনা তা পুংখ্যানুপুংখরুপে খতিয়ে দেখতেই এ তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে শনিবার রাত সোয়া ১১টায় সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের দুটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এমএএস