নিজের দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতেই স্ত্রীকে হত্যা


প্রকাশিত: ০৯:১৮ এএম, ০৬ আগস্ট ২০১৫

জুয়েল বিশ্বাসের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের পর তাকেই বিয়ে করেন নাছিমা। জুয়েলের কথা মতোই চলতেন নাছিমা। কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়ায় স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে। নিজের দ্বিতীয় বিয়ে গোপন করতেই স্ত্রী নাছিমাকে খুন করেন জুয়েল।

শুধু তাই নয়, ঘটনার রাতে অনেকটা হাসির ছলেই স্ত্রীর হাত-পা বাধে জুয়েল। এরপর শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। ভোরের আলো আসার আগেই শিশু সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যায় জুয়েল।

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর এলাকায় গত ২৮ জুন সংঘটিত ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন শেষে এমনই তথ্য জানায় পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ।

তিনি বলেন, গত ৩০ জুন কামরাঙ্গীরচর থানার পশ্চিম রসুলপুর কামাল সুপার মার্টের পেছনের আনোয়ার মিয়ার বাড়ির একটি কক্ষ থেকে তালা ভেঙ্গে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ঘটনার একমাস পর পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়।

নিহত নাসিমা বেগমকে তার স্বামী জুয়েল বিশ্বাস শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

গ্রেফতারকৃত জুয়েল বিশ্বাসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নাসিমা ২০০৮ সালের দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করত। জুয়েল বিশ্বাস পেশায় একজন রং মিস্ত্রী। তিনিও মোহাম্মদপুর এলাকার একটি মেসে ভাড়া থাকতেন। জুয়েল নিজের নাম পরিবর্তন করে ইমন ছদ্মনামে নাসিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়।

এরপর ২০০৯ সালে জুয়েল তার ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়েই নাসিমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকেই নাছিমা তার বাবার বাড়ি যশোরে ছিল। জুয়েল ঢাকাতেই থাকতেন। মাঝেমাঝে তিনি যশোরে যেতেন। ২০১০ সালে দিপু নামে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।

তিনি আরও জানান, জুয়েল নিজের বাড়ি বরিশাল বললেও সত্যিকারের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়। জুয়েল ২০১২ সালে নিজ এলাকায় আরও একটি বিয়ে করে। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর নাছিমা ক্ষোভ প্রকাশ করে। এরপর থেকে নাছিমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে তারা যাত্রাবাড়ীতে কয়েক মাস বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। এরপর কামরাঙ্গীরচরে গত ২৬ জুন পশ্চিম রসুলপুরের ১নং রোড সংলগ্ন ওই বাসাটি ভাড়া নেয় জুয়েল। বাড়ি ভাড়া নেওয়ার সময় জুয়েল বাড়িওয়ালাকে কোনো মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা দেয়নি।

উপ-পুলিশ কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ২৮ জুন রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে জুয়েল হাসতে হাসতে নাছিমার হাত-পা বেধে ফেলেন। এরপর কাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

বাসার দরজায় বাহির থেকে তালা দিয়ে চলে যায় জুয়েল। ছেলেকে নিয়ে সে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া পালিয়ে যায়। সেখানে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে ছেলেকে রেখে আবারও মোহাম্মদপুরের মেসে উঠে জুয়েল।

লালবাগ বিভাগের এ উপ-পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ঘটনার পর কামরাঙ্গীরচর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা রুজু করে। তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার মূল আসামী জুয়েল বিশ্বাসকে রাজধানীতে ধানমন্ডি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।

জেইউ/এআরএস/এমআরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।