নকলে বাধা দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতার হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিত


প্রকাশিত: ১২:২২ পিএম, ১২ জুন ২০১৫

শুক্রবার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় নকল করতে বাধা দেয়ায় দুই জন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ শিক্ষকরা একজোট হয়ে ধাওয়া দিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।

পরে সিনিয়র রাজনৈতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ঘটনাটি নিষ্পতি করা হয়। বগুড়া সরকারি শাহসুলতান কলেজে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, শুক্রবার  সকাল ১০টা থেকে সরকারি শাহসুলতান কলেজ কেন্দ্রে মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা চলছিল। পরিক্ষা চলাকালে একজন পরীক্ষার্থী মোবাইলের ম্যাসেজ দেখে উত্তর লেখার সময় কক্ষ পরিদর্শক, কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জেবুন্নেছা বেগম বাধা দেন। পরে তিনি পরিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।
 
এদিকে এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিত কুমার দাস কয়েকজন নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে নকলে বাধা দেওয়ায় ওই শিক্ষিকাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাঞ্ছিত করেন। এসময় ওই কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম রেজা শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকেও লাঞ্চিত করেন। এই বিষয় নিয়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে কলেজের অন্য শিক্ষকরা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরকে ধাওয়া দিলে তারা ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যায়। পরে পরীক্ষা শেষে ছাত্রলীগের ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরে অবস্থান নিলে শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষকরাও এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে জরুরী স্টাফ কাউন্সিলের বৈঠকে বসেন।

কিছুক্ষণ পর জেলা স্বেচ্ছা সেবকলীগের সভাপতি আসাদুর রহমান দুলু এবং জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষের কক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এক পর্যায়ে সরকারি আযিযুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামস্ উল আলম জয় বৈঠক স্থলে আসেন। শিক্ষকদের নিয়ে চলা বৈঠকে সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এসময় দরজার সামনে ছাত্রলীগ নেতারা অবস্থান নিয়ে থাকে। বৈঠকে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগ সভাপতির আচরণে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। শেষে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিত কুমার দাস শিক্ষকদের হাত ধরে ক্ষমা চাওয়ার মধ্য দিয়ে সিনিয়র নেতারা বিষয়টি সমঝোতা করে দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করে।
 
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বিশ্বজিত কুমার দাস মোবাইল না ধরায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস বলেন, শিক্ষকদের সাথে ভুল বুঝাবুঝির কারণে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে। উভয়পক্ষের সমঝোতায় বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধান হয়েছে।


লিমন বাসার/ এমএএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।