দেশে ফিরলেন আরো ১৫৯ বাংলাদেশি
উদ্ধার হওয়ার আড়াই মাস পর অবশেষে দেশের মাটিতে পা রেখেছেন অভিবাসন প্রত্যাশী আরো ১৫৯ বাংলাদেশি। সোমবার দুপুর দেড়টায় কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্ত হয়ে চতুর্থ দফায় তাদের দেশে ফিরিয়ে আনেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
নির্ধারিত সময়ানুসারে তাদের ফিরিয়ে আনতে সোমবার সকালে মংডুতে পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি ও মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন বিভাগ। বৈঠক শেষে বিজিবির কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। এসব অভিবাসীদের আগের মতো কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবৈধ পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে মিয়ানমার উপকূলের জলসীমা থেকে সে দেশের নৌ-বাহিনীর হাতে অন্যদের সঙ্গে এরাও আটক হয়েছিল।
বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে সকালে কক্সবাজারের ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে মংডুতে যান বিজিবির ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। তাদের স্বাগত জানিয়ে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন পুলিশ। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ইমিগ্রেশন পুলিশের উপ-পরিচালক চ নাইং।
এর আগে গত ৩০ জুলাই এদের ফেরত আনার কথা থাকলেও এর আগের দিন থেকে কক্সবাজারসহ উপকূলীয় কয়েকটি জেলায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আঘাত হানার আশঙ্কায় স্থগিত করা হয়। পরে দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে আলোচনা করে এদের ৫ আগস্ট দেশে ফেরত আনার দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে মিয়ানমারে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানা ও পরবর্তী সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কারণে ৪ আগস্ট সেই ১৫৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনার প্রক্রিয়া দ্বিতীয়বারের মতো স্থগিত করা হয়।
তবে ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে কারণ উল্লেখ না করলেও বিজিবির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছিল অনিবার্য কারণবশত ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি স্থগিত করা হয়েছে।
লে. কর্নেল রবিউল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পৌছানোর পর এসকল অভিবাসীর ব্যাপারে খোঁজ নেবে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এরপর তাদের আইএমও এবং রেডক্রিসেন্টের হাতে তুলে দেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ন্যাশনাল প্রোগাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত ১৫৯ জন ১০ জেলার বাসিন্দা। এর মধ্যে নরসিংদীর ৮০ জন, চট্টগ্রামের ১৮ জন, হবিগঞ্জের ১৭ জন, কিশোরগঞ্জের ১৩ জন, নারায়ণগঞ্জের ১২ জন, ফরিদপুরের ১২ জন, শরীয়তপুরের ৩ জন, নওগাঁর ২ জন, নাটোরের ১ জন ও বরিশালের একজন বাসিন্দা রয়েছে। এদের মধ্যে শিশু-কিশোর রয়েছে ১৬ জন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ২০৮ জন এবং ২৯ মে আরো ৭২৭ জনকে উদ্ধার করে দেশটির নৌবাহিনী। যার মধ্যে ৮ ও ১৯ জুন এবং ২২ জুলাই তিন দফায় দেশে ফেরত আনা হয় ৩৪৭ জনকে। ৪র্থ বারের মত ১৫৯ জনসহ এ পর্যন্ত ৫০৬ অভিবাসন প্রত্যাশীকে দেশে ফেরত আনা হলো।
সায়ীদ আলমগীর/এসএস/আরআইপি