ডায়রিয়ায় অপুষ্ট শিশু নিরুপনে আইসিডিডিআরবি`র নতুন গবেষণা তথ্য


প্রকাশিত: ১০:৪৩ এএম, ১০ জুন ২০১৫

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত অপুষ্ট শিশু নিরুপনে ওজন পদ্ধতির চাইতে ফিতা দিয়ে শিশুর বাহুর মধ্যভাগের গোলকার পরিধির পরিমাপ অনেক বেশি যথার্থ ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বর্তমান গাইডলাইন অনুযায়ী ওজন পদ্ধতিতে অপুষ্টি পরিমাপ পদ্ধতির কথা বলা হলেও আইসিডিডিআরবি’র সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে- ওজন পদ্ধতির চাইতে বাহুর পরিধি পরিমাপ পদ্ধতি বেশি নির্ভরযোগ্য।

গবেষণার ফলাফল ‘জার্নাল অব নিউট্রেশনে’ প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় যৌথভাবে অর্থায়ণ করেছে ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব হেলথ ফগারটি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার, ইউনিভার্সিটি ইমার্জেন্সী মেডিসিন ফাউন্ডেশন ও আইসিডিডিআরবি।

গবেষকরা ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে আসা পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের চিকিৎসা ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, ওজন পরিমাপক পদ্ধতিতে শতকরা ১২ থেকে ১৪ ভাগ শিশুকে অপুষ্টির শিকার চিহ্নিত করা হলেও বাহু পরিমাপ পদ্ধতিতে ওই শিশুদের মাত্র ১ থেকে ২ ভাগ অপুষ্টির শিকার হয়েছে বলে চিহ্নিত করা গেছে।

ডায়রিয়া দেশের একটি প্রচলিত রোগ। প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য শিশু বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান। বর্তমানে ওজন মেশিন দিয়ে মেপে তারা অপুষ্টির শিকার কিনা তা নির্ধারণ করা হয়।

আইসিডিডিআরবি ৪ জুন তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে গবেষণার বিষয়টি প্রকাশ করেছে। আইসিডিডিআরবি`র সেন্টার ফর নিউট্রেশন অ্যান্ড ফুড সেফটি বিভাগের ডা. সাবিহা নাসরিন, নুর এইচ আলম, মো. ইকবাল হোসেইন ও  যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেখক ড. অ্যাডাম লিভাইন তাদের গবেষণায় দেখেছেন মধ্যভাগের বাহুর পরিধি মেপে পুষ্টিহীন শিশু নিরুপন জনপ্রিয়তা লাভ করছে। সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে এ পদ্ধতিতে অধিক যথার্থভাবে পুষ্টিহীনতা নিরুপন সম্ভব।

তারা বলেছেন, পানিশূণ্যতার কারণে ডায়রিয়া হলে শিশুর বাহুর পরিধির চাইতে ওজন কমে যায় এবং বিষয়টি চোখে পড়ে। ওজনের ওপর ভিত্তি করে তাকে অপুষ্ট শিশু চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু পানিশূণ্যতা দূর হলে তার ওজন ফিরে পায়। ফলে ওই শিশুকে অপুষ্টির শিকার চিহ্নিত করা অনেক সময় ভুল হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেখক ড. অ্যাডাম লিভাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানান।

ড. লিবাইন আরো বলেন, তাদের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা আস্থার সঙ্গে মধ্যভাগের বাহুর পরিধি মেপে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পরিপূরক খাবারের পরামর্শ দিতে পারেন।

উল্লেখ্য, খাদ্যঘাটতি বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ। খাদ্য ঘাটতির কারণে বিশ্বে প্রতি বছর ৫ লাখ শিশু মৃত্যুবরণ ও ১০ কোটি শিশু কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এসব শিশুর বেশির ভাগই দরিদ্র দেশের।

এমইউ/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।