কোকোকে ঘিরে যত রাজনৈতিক বিতর্ক


প্রকাশিত: ০১:৫১ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো সক্রিয় রাজনীতি থেকে সব সময় দূরেই থেকেছেন। কিন্তু তাই বলে তাঁকে নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক কম হয়নি। বিভিন্ন সময়ে নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র।

১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান যখন এক সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন, তখন আরাফাত রহমানের বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। টেলিভিশনে দুই নাবালক সন্তানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার শোকার্ত ছবি সে সময় তাদের পক্ষে বড় ধরণের সহানুভূতির ঢেউ তৈরি করে। কিন্তু এদের দুজনের এই নিস্কলুষ ভাবমূর্তি পরবর্তী জীবনে আর অক্ষুণ্ন থাকেনি।

২০০১ সালে চারদলীয় জোট নিয়ে খালেদা জিয়া যে সরকার গঠন করেন, সেই সরকারের আমলে তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধেই ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির নানা অভিযোগ উঠে।

আরাফাত রহমানকে তাঁর বড় ভাই তারেক রহমানের মতো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর অবশ্য আরাফাত রহমানকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছিলো।

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ওই বছর ৩রা সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সঙ্গেই ঢাকা সেনানিবাসে তাদের তখনকার বাড়ি থেকে আটক হয়েছিলেন আরাফাত রহমান কোকো।

পরের বছর জুলাইয়ে ওই সরকারেরই এক নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য তিনি থাইল্যান্ড যান। কিন্তু পরে আর দেশে ফিরে আসেননি। বিএনপি পক্ষ থেকে বলা হয়, কোকো বিভিন্ন ধরণের অসুস্থতার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

তার আইনজীবি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই কোকোর বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচারের একটিসহ মোট সাতটি মামলা হয়েছিলো।

এদিকে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কোকোর সাময়িক মুক্তির সময়সীমা আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকে আইনের দৃষ্টিতে কার্যত তিনি পলাতক ছিলেন।

এ অবস্থায় তার অনুপস্থিতিতেই ২০১১ সালে অর্থ পাচারের মামলায় তাকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয় আদালত, যে টিকে বিএনপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছিলো।

২০১২ সালের নভেম্বরে কোকো ও তার সহযোগীদের পাচার করা প্রায় ২০ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার দেশে ফিরে আনার কথা জানায় দুর্নীতি দমন কমিশন। এর মধ্যে অবশ্য আরাফাত রহমানের থাইল্যান্ড থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ঢাকায় থাই দূতাবাস ও বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা বললেও বিএনপি বা খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

শেষ পর্যন্ত শনিবার মালয়েশিয়াতেই মাত্র ৪৫ বছর বয়সে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তাঁর স্ত্রী এবং দুই কন্যা এসময় সেখানেই ছিলেন।

এএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।