একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালাকে চ্যালেঞ্জ


প্রকাশিত: ১০:২৬ এএম, ১০ জুন ২০১৫

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা নীতিমালাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম খানকে বিবাদী করে এ রিটটি করা হয়। আগামী রোববার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবী।

তিনি জানান, রিটে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নীতিমালা ২০১৫ এর আটটি ধারা যথা (২.১, ৩.১, ৩.২, ৩.৩, ৪.২, ৫.৩, ৯.১ ও ৯.৩) কে কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের করা এ নীতিমালাটি স্থগিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘মেধা তালিকার ভিত্তিতে নয়, পরীক্ষার মাধ্যমেই ভর্তি করাতে আমি রিট আবেদনটি করেছি। কারণ একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারের করা এ নীতিমালা সংবিধানের কয়েকটি ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

তিনি জানান, নীতিমালার ২.১ ধারায় বলা হয়েছে- ২০১৩ সালের পূর্বে যারা এসএসসি পাস করেছে তাদের ভর্তি করা হবে না।
৩.১ ধারায়, ভর্তির জন্য কোনো বাছাই বা ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না। কেবল শিক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ভর্তি করা হবে।

৩.২ ধারায়, বিভাগীয় শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ শতাংশ কোটা থাকবে। ৩.৩ ধারায়– বিভাগীয় শহর ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ২ শতাংশ কোটা থাকবে বলা হয়েছে। ৪.২ ধারায়, আবেদন ফি ১৫০ টাকা, একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫ কলেজে পছন্দক্রম দিতে পারবে। অনলাইনে একবার আবেদন করতে পারবে। প্রতি কলেজের জন্য আবেদন ফি ১২০ টাকা।

৫.৩ ধারায়, এসএমএস প্রাপ্তির পর মেধাক্রম অনুসারে কলেজের নোটিশ বোর্ড বা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। কোনো কারণে আসন শূন্য হলে বোর্ডের পছন্দ অনুসারে দ্বিতীয় মেধাক্রম প্রকাশ করতে হবে। ৯.১ ধারায়, সব কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে এ নীতিমালা প্রযোজ্য হবে। ৯.৩ ধারায় এ নীতিমালা না মানলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো জানান, এ নীতিমালা ৭, ২৬, ২৭, ২৮, ৩১, ৪০ ও ১৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর ২৩ অধ্যায় অনুসারে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে না কিন্তু অন্যান্য সব শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসি ও এর সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মেধা তালিকা অনুসারে ভর্তির জন্য একটি নীতিমালা করা হয়। গত ১ জুন এটি জারি করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান।

পরে এ নীতিমালার ৩.১, ৪.১, ৪.২, ৫.৩, ৯.১ ও ৯.৩ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন হলিক্রস কলেজের অধ্যক্ষ সিস্টার শিখা এল গোমেজ, নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার হেমন্ত পিয়াস রোজারিও এবং সেন্ট জোসেফ কলেজের অধ্যক্ষ ব্রাদার রবি ফিউরিফিকেশন।

শুনানি শেষে ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণীতে মেধা তালিকার ভিত্তিতে ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা নীতিমালা রাজধানীর এ নামি তিন কলেজের ক্ষেত্রে স্থগিত করেন হাইকোর্ট। আগামী ছয় মাসের জন্য এ স্থগিতাদেশ দেন আদালত।

একইসঙ্গে এই তিন কলেজের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় ভর্তির নীতিমালার ৬টি ধারা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন আদালত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান ও কলেজ পরিদর্শককে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

যার ফলে মেধা তালিকা অনুসারে নয়, ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই নটরডেম, হলিক্রস ও সেন্ট জোসেফ কলেজ কর্তৃপক্ষ একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবে।

এসএইচএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।