অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড : আটক ফারাবীকে ডিবিতে হস্তান্তর
মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও লেখক ড. অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক প্রধান সন্দেহভাজন শফিউর রহমান ফারাবীকে ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ডিবি পুলিশের কাছে ফারাবীকে হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উয়িং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
এরআগে সোমবার ভোরে আটকের পর র্যাব প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফারাবীকে। অভিজিৎ রায়কে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন ফারাবী।
তবে সম্প্রতি ফারাবীর টুইট স্ট্যাটাস ও বিভিন্ন সময় নাশকতা ভাংচুরের ঘটনায় অভিজিত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ফারাবী জড়িত বলে দাবি করে র্যাব।
উল্লেখ্য, পুলিশ প্রশাসনসহ নিহতের পরিবারের দাবি উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সদস্যরা এ খুন করতে পারে। ব্লকে লেখালেখির কারণে অভিজিৎকে টার্গেট করা হয়েছিল।
এদিকে ঘটনার দিন রাতেই অভিজিৎ হত্যায় দায় স্বীকার করে টুইট করেছে আনসারউল্লাহ বাংলা-৭ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন। টুইটারে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পোস্ট করা বার্তায় সংগঠনটি অভিজিৎ রায়কে হত্যার ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে।
আল কায়েদার মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ সংগঠনটি অভিজিৎ রায়কে ‘ইসলামের শত্রু’ বলে আখ্যা দেয়। সেখানে বলা হয়, ইসলামের বিরুদ্ধে অপরাধ করায় অভিজিৎ রায়কে গত ৩/৪ বছর ধরে ‘টার্গেটে’ রাখা হয়। এছাড়া অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর টুইটারে ‘হ্যাঁ, আমরা পেরেছি’ বলে উল্লাস করে সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ড. অভিজিৎ রায়কে হত্যার পর অজ্ঞাতসংখ্যক আসামী করে পরদিন শুক্রবার সকালে শাহবাগ থানায় একটি মামলাটি দায়ের করেন তার বাবা। মামলা নম্বর-৫১। এরপর শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে মামলাটির তদন্ত ভার ডিবিকে দেওয়া হয়। র্যাবও স্বপ্রণোদিত হয়ে দিন-রাত নিরলস পরিশ্রম করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য তৎপর হয়।
র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ শেষে নিশ্চিত হয় যে, অভিজিত রায়কে হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী ঢাকা ত্যাগ করার উদ্দেশ্যে যাত্রাবাড়ী হয়ে চট্টগ্রাম এলাকায় রওনা দিবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল তাকে অনুসন্ধান পূর্বক সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ফারাবীকে আটক করে।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ব্লগার ও লেখক প্রকৌশলী ড. অভিজিত রায় ও তার স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাকে টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৩নং গেটের সামনে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে জখম করে। গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাত সোয়া ১০টার দিকে মারা যান অভিজিৎ।
ব্লগার ও লেখক অভিজিত খুনের পর থেকেই দেশের সাধারণ জনগণসহ আর্ন্তজাতিক মহল এর নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়।
# অভিজিত হত্যায় ফারাবী জড়িত: র্যাব
জেইউ/আরএস/আরআই