পুরস্কারের পেছনে টিমের অবদান সবচেয়ে বেশি : ইউসুফ
যুক্তরাজ্য থেকে ২০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রিন্সেস ডায়ানার স্মরণে সমাজসেবায় যুক্ত তরুণদের দেওয়া হয় ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’। প্রিন্সেস ডায়ানার দুই ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারি সরাসরি এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। গত ২৮ জুন রাত ৯টায় চলতি বছরের ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত তরুণদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ১৯ জন।
সম্মানজনক এ তালিকায় আছেন তরুণ সামাজিক উদ্যোক্তা ইউসুফ মুন্নাও। তার প্রতিষ্ঠিত কিশোরভিত্তিক সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম ‘রিফ্লেকটিভ টিনস’র মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তনমূলক বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য তাকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মুঠোফোনে জাগো নিউজের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলাপে ইউসুফ মুন্না জানিয়েছেন নিজের কাজ সম্পর্কে। কথা বলেছেন বেনজির আবরার–
জাগো নিউজ: অভিনন্দন ইউসুফ। আপনার এ অর্জনের অনুভূতি কী?
ইউসুফ মুন্না: ধন্যবাদ আপনাকে এবং জাগোনিউজ২৪.কমকে। খুব ভালো লাগছে অবশ্যই। গোটা টিমের জন্য অনেক বড় একটা অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে। আশা করি, এ অর্জনের মাধ্যমে আমাদের কাজের পরিসর ও গতি বৃদ্ধি পাবে।
জাগো নিউজ: আপনার উদ্যোগ সম্পর্কে কিছু বলুন–
ইউসুফ মুন্না: আমরা মূলত রিফ্লেকটিভ টিনস নামের একটা কিশোরভিত্তিক সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করছি। যার উদ্দেশ্য কিশোরদের সৃজনশীলতার বিকাশ ও পরিচর্যায় কাজ করা।
জাগো নিউজ: এ অর্জনের পেছনের গল্প বলুন–
ইউসুফ মুন্না: আমার টিমের অবদান সবচেয়ে বেশি এ পুরস্কারের পেছনে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। টিমের সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তাদের অবদানের জন্য আমি গর্বিত।
জাগো নিউজ: আপনারা কোন ধরনের কাজ করেছিলেন?
ইউসুফ মুন্না: রিফ্লেকটিভ টিনস বিগত আট বছর ধরে চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঢাকাসহ বাংলাদেশের নানা প্রান্তের ৪৭ হাজারেরও বেশি কিশোরের সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ এবং বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে। আমাদের প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো–ব্রিজেস নট বরডার্স, ব্রেইনারি এবং ক্রিয়েটর্স কনভারজেন্স।
জাগো নিউজ: আপনার পরিবারের অনুভূতি কী?
ইউসুফ মুন্না: আমার বাবা, মা, বড় বোন আর ছোট ভাই–সবাই খুবই আনন্দিত এ খবর পেয়ে। সবচেয়ে বেশি খুশি আমার আদরের দুই ভাগ্নি–নায়রা আর ইউশরা।
জাগো নিউজ: আপনার পড়াশোনা সম্পর্কে জানতে চাই–
ইউসুফ মুন্না: আমি বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক করছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমকে মূল্যায়নের মাধ্যমে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য #countECA নামের একটি ভার্চুয়াল মুভমেন্ট শুরু করেছি।
জাগো নিউজ: আপনার অন্যান্য অর্জন বা স্বীকৃতি সম্পর্কে যদি বলতেন–
ইউসুফ মুন্না: আমি ২০১৫ সালে TEDx এ বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। ২০১৭ সালে প্রভাবশালী সামাজিক উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ‘অশোকা ইয়াং চেঞ্জমেকারে’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। একই বছর নেপালে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল টিন কনফারেন্সে আলোচক হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। ২০১৭ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল পার্টনারশিপ সামিট ও ২০১৮ সালে ফিলিপিন্সে অনুষ্ঠিত অশোকা চেঞ্জমেকার এক্সচেঞ্জে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি।
জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ইউসুফ মুন্না: আমি বিশ্বাস করি, এটা সবে শুরু। আর অনেক দূর পাড়ি দিতে হবে। প্রতিনিয়ত কিশোরকেন্দ্রীক নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আগামী দিনগুলোয় রিফ্লেকটিভ টিনস তার লক্ষ্য অর্জনে সব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাবে–এটাই প্রত্যাশা করি।
এসইউ/এমকেএইচ