শুভ জন্মদিন চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুক

বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৪২ এএম, ১৮ আগস্ট ২০১৬

কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুকের জন্মদিন আজ। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তবে ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রয়াণের পর আর কখনোই নিজের জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপন করেননি এই নায়ক।

এমনকি ছোটবেলা থেকেই তার জন্মদিন বিশেষভাবে উদযাপিত হতো না। কারণ মাত্র আট বছর বয়সে ফারুক তার মা আফজালুন্নেসাকে হারিয়েছেন। মাকে হারানোর পর থেকেই যেন ফারুক জীবন সংগ্রামে পড়ে যান। তাই জন্মদিন নিয়ে কখনোই তার বিশেষ কোনো আগ্রহ ছিল না।

আজ জন্মদিনে দুটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে তিনি দুটি ভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হবেন। একটি বৈশাখী টিভির ‘আলাপন’ অন্যটি চ্যানেল আইয়ের ‘তারকা কথন’। ফারুক চ্যানেলের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ছাড়া বাকিটা সময় পরিবারের সঙ্গেই কাটাবেন।

ফারুক বলেন, ‘আমার জন্মদিনে দুটি চ্যানেলের নিমন্ত্রণে আমি ঠিকই দুটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছি। কিন্তু জন্মদিন নিয়ে আমার মাঝে তেমন কোনো বিশেষ অনুভূতি নেই। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাকে খুব আদর করতেন। আর আগস্টেই আমরা তাকে নির্মমভাবে হারিয়েছি। সেই শোক আজও ভোলার নয়। তাই তার শোকেই কাটে এই মাসটি।’

পুরো নাম আকবর হোসেন পাঠান দুলু। কিন্তু ফারুক নামে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর ও যৌবনে তিনি খুবই দূরন্তপনা ছিলেন। আর ওই সময়টা কেটেছে গ্রামের বাড়ী ও পুরান ঢাকায়। এখন তিনি থাকেন উত্তরায় নিজ বাড়ীতে।

গ্রামের বাড়ী গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণসোম গ্রামে। বাবা আজগর হোসেন পাঠান ছিলেন একজন ইসলামী মনষ্ক মানুষ ছিলেন। গান-বাজনা-সিনেমা তিনি কখনোই পছন্দ করতেন না। বলতে গেলে এক প্রকার বাবার অবাধ্য হয়েই মিয়া ভাই (ফারুক) চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ৫ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। ব্যক্তি জীবনে ফারুক ভালোবেসে করেন ফারজানা পাঠানকে। তাদের দাম্পত্য জীবনে ফারিহা তাবাসসুম নামের একটি কন্যা ও রওশন হোসেন নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

চিত্রনায়ক ফারুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহামনের ডাকে সারা দিয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। এনে দেন স্বাধীন সার্বভৌত্বের লাল সূর্য। বিশ্ব মানচিত্রে অঙ্কন করেন বাংলা নামের একটি দেশের জলছবি। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।

১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত জলছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে ফারুকের অত্মপ্রকাশ হয়। প্রথম ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন মিষ্টি মেয়ে কবরী। এরপর ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র খান আতাউর রহমানের পরিচালনায় আবার তোরা মানুষ হ ও ১৯৭৪ সালে নারায়ণ ঘোষ মিতার আলোর মিছিল এ দুটি চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি।

১৯৭৫ সালে তার অভিনীত সুজন সখী ও লাঠিয়াল ছবি দুটি ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়। ওই বছর লাঠিয়াল-এর জন্য তিনি সেরা পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। ১৯৭৬ সালে সূর্যগ্রহণ ও নয়নমনি, ১৯৭৮ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত আব্দুল্লাহ আল মামুনের সারেং বৌ, আমজাদ হোসেনের গোলাপী এখন ট্রেনেসহ বেশকিছু ছবিতে মিয়া ভাই খ্যাত চিত্রনায়ক ফারুকের অভিনয়ন প্রশংসিত হয়।

চলচ্চিত্রের বাইরে তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। গাজীপুরে অবস্থিত নিজ শিল্প প্রতিষ্ঠান ফারুক নিটিং ডাইং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তিনি। মাঝে তিনি দীর্ঘ সময় কিডনি জনিত রোগে ভোগছিলেন। পরে সিঙ্গাপুরে থেকে উন্নত চিকিৎসা নিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফেরেন। বর্তমানে তিনি খুব সুস্থ্য জীবন যাপন করছেন।

আব্দুর রহমান আরমান/এনই/এলএ/এইচআর/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।