কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীদের পরিণতি
আল্লাহ তাআলা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবুয়্যত প্রদানের মাধ্যমে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। যার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পূর্ববর্তী নবি ও রাসুলদের কাছে আগত তাওরাতসহ সকল আসমানি কিতাবে ছিল। এ সকল আসমানি কিতাবের অনুসারীরা নিজেদের আধিপত্য খর্ব হওয়ার আশংকায় নিদ্বির্ধায় তা অস্বীকার করে। যার ফলে আল্লাহ তাআলা পরকালে এ সকল লোকদের সঙ্গে কোনো সম্পর্কই রাখবেন না। কুরআনে তাদের মনোভাব ও পরিণতি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘মূলত আল্লাহ তাআলা তাঁর কিতাবে যে সমস্ত বিধান অবতীর্ণ করেছেন সেগুলো যারা গোপন করে এবং সামান্য পার্থিব্য স্বার্থের বেদিমূলে সেগুলো বিসর্জন দেয় তারা আসলে আগুন দিয়ে নিজেদের পেট ভর্তি করেছে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাদের সঙ্গে কথাই বলবেন না। তাদের পবিত্রতার ঘোষণাও দিবেন না। এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭৪)
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ১৭৪নং আয়াত এটি। এ আয়াতটি ঐসকল ইয়াহুদি আলেমদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে, যারা তাওরাতের বিধি-বিধানকে এবং বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিবরণসমূহকে সাধারণ মানুষের কাছে গোপন রাখতো। এমনকি বর্ণিত গুণাবলীর বিপরীতে তথ্য পরিবেশন করত এবং সাধারণ জনগণ থেকে হাদিয়া-তোহফা আদায় করতো।
পড়ুন- সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৩
ইয়াহুদিদের ধারণা ছিল যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়্যতের সত্যতার আয়াতগুলো যা তাওরাতে বিদ্যমান রয়েছে; এগুলো যদি মানুষের মধ্যে প্রকাশ পায় তবে সব মানুষ বিশ্বনবির আয়ত্তাধীন হয়ে যাবে এবং তাদেরকে ত্যাগ করবে। এ ভয়ে তারা আল্লাহ তাআলার হিদায়াত ত্যাগ এবং মাগফিরাত ত্যাগ করে পথভ্রষ্টতা ও শাস্তির ওপরেই তারা সন্তুষ্ট হয়ে গেছে।
এ কারণেই আল্লাহর বিধান লংঘনকারীদের ওপর ইহলৌকিক ও পরলৌকিক ধ্বংস অবতীর্ণ হয়েছে। আর তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পরকালে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না; তাদেরকে পবিত্র করবেন না বরং আল্লাহর তাআলার বিধানের বিপরীত অবস্থানের জন্য তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির মধ্যে জড়িত থাকবে।
পরিষেশে...
আল্লাহ তাআলা কুরআনে তাদের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ মুসলিম উম্মাহকে জানানোর উদ্দেশ্য হলো, কোনো মানুষই যাতে তার বিধানের বিপরীতে কাজ না করে। তাঁর হুকুম আহকাম যথাযথ পালন করে পরকালের চিরস্থায়ী শান্তির স্থান জান্নাত লাভে সচেষ্ট হয়।
আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদিকে কুরআনের বিধি-বিধান মেনে বিশ্বনবির আনুগত্য করে পরকালের সফলতা লাভের জন্য কবুল করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর